মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ ডিসেম্বর: প্রত্যন্ত জঙ্গলমহলেও নজরকাড়া জীববৈচিত্র্য উদ্যান বা বায়োডাইভার্সিটি পার্ক (Biodiversity Park)। খুলে গেল নতুন বছরের (২০২৫) আগেই। যদিও, পার্ক সাজানোর কাজ চলছে এখনও। প্রায় ১০ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা ব্যয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের কমলা এলাকায় (গভঃ আইটিআই কলেজের বিপরীতে) নির্মিত হয়েছে এই বায়োডাইভার্সিটি পার্ক। জেলা শহর মেদিনীপুর থেকে মাত্র ২০-২১ কিলোমিটার দূরে শালবনী ব্লকের ৪নং বাঁকিবাঁধ অঞ্চলের কমলা এলাকায় (৬০নং জাতীয় সড়ক থেকে কয়েকশো মিটারের মধ্যেই) মাত্র দু’একর জমিতে এক সুসমৃদ্ধ এবং আকর্ষণীয় পার্ক গড়ে তোলাই শালবনী ব্লক প্রশাসনের লক্ষ্য বলে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জানিয়েছেন বিডিও রোমান মন্ডল। তিনি আশাবাদী, ১ জানুয়ারির আগেই প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ করার চেষ্টা চলছে। যদিও, ‘মনের মতো’ করে বা ‘পরিকল্পনা মাফিক’ সাজিয়ে তুলতে আরও মাসখানেক সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিডিও।
এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে এই পার্ক। আপাতত কোনও প্রবেশ মূল্য রাখা হয়নি। পার্কে নজরকাড়া ‘আই লাভ শালবনী’ সেলফি জোন, ভেষজ উদ্যান, ফুলের উদ্যান প্রভৃতি কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। প্রজাপতি উদ্যান এবং অভয় পুকুরের কাজ চলছে। এই অভয় পুকুরে বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন দেশী মাছ সংরক্ষণ করা হবে বলে বিডিও জানিয়েছেন। অভয় পুকুরের মাঝে বসেছে ‘বিশ্ববাংলা গ্লোব’। শিশুদের বিনোদনের জন্য নানা উপকরণের সাথে সাথেই বড়দের ‘আউটডোর জিম’-ও থাকছে শালবনীর এই বায়োডাইভার্সিটি পার্কে। তবে, পার্কের সব থেকে আকর্ষণীয় বিষয় হতে চলেছে ‘রক ক্লাইম্বিং’। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এখনও কোনও পার্কে এই রক ক্লাইম্বিং অ্যাডভেঞ্চারের ব্যবস্থা নেই বলেই জানিয়েছে শালবনী ব্লক প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার পড়ন্ত বিকেলে জঙ্গলমহলের এক মনোরম পরিবেশের মাঝে অবস্থিত এই জীববৈচিত্র্য উদ্যানে দাড়িয়ে শালবনী ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক (BDO) বলেন, “রাজ্যের পরিবেশ দপ্তরের তরফে শালবনী ব্লকে একটি জীববৈচিত্র্য বৈচিত্র্য উদ্যান বা বায়োডাইভার্সিটি পার্ক তৈরির জন্য ১০ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা এসেছিল। আমরা এই জায়গাটি বেছে নিয়েছি। গত ৩-৪ মাস আগে থেকে কাজ শুরু করেছিলাম। তা এখন প্রায় শেষের পথে!” তিনি এও বলেন, “এই বায়োডায়ভার্সিটি পার্কে শিশুদের জন্য বিনোদনমূলক নানা উপকরণ ছাড়াও ভেষজ উদ্যান, বাটারফ্লাই গার্ডেন প্রভৃতি থাকছে। এছাড়াও, দেশি মাছেদের সংরক্ষণের জন্য একটি অভয় পুকুর নির্মিত হচ্ছে। রক ক্লাইম্বিং অ্যাডভেঞ্চারের ব্যবস্থাও করা হবে। তবে, সেই কাজ সম্পূর্ণ হতে কিছু সময় লাগতে পারে।” যদিও, সর্বসাধারণের জন্য ইতিমধ্যেই পার্ক খুলে দেওয়া হয়েছে। পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ কিভাবে হবে? বিডিও বলেন, “খুব ভাল প্রশ্ন! অত্যন্ত এই এলাকায় পার্কে এখনি আমরা প্রবেশ মূল্য রাখছি না। সেক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ জোগাড় করতে কিছুটা কাঠখড় পোড়াতেই হবে। আমরা এনিয়ে পরিকল্পনা করেছি, ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির তরফে নির্দিষ্ট কোন তহবিলের ব্যবস্থা করে, সেখান থেকেই আপাতত খরচ চালাব!”