দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ নভেম্বর: কোনো প্রবেশিকা পরীক্ষা (Entrance Test/ Admission Test) নয়; সরাসরি ভর্তি নিতে হবে পঞ্চম শ্রেণীতে। চতুর্থ শ্রেণীর সকল পড়ুয়াকেই সরাসরি পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি নিতে হবে। এমনই দাবিতে বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবন (উচ্চ মাধ্যমিক), মেদিনীপুরের সামনে। তাঁদের অভিযোগ, গত ১৯ অক্টোবর মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, রামকৃষ্ণ মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত ১১৪ জন পড়ুয়ার মধ্যে প্রথম ৫০ জনকে মেধার ভিত্তিতে (বা, নম্বরের ভিত্তিতে) রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের (উচ্চ মাধ্যমিক) পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি নেওয়া হবে। বাকিদের বাইরের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গেই প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে হবে। যারা সেই প্রবেশিকা পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হবে, তারাই মিশনের উচ্চ বিদ্যালয়ে (রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনে) পড়ার সুযোগ পাবে। আর, এই নির্দেশিকাকে ‘অন্যায্য’ ও ‘বেআইনি’ দাবি করে বুধবার জেলা শহর মেদিনীপুরের নতুনবাজার স্থিত রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়াদের অভিভাবকরা।
ঝুমুর জানা, সুস্মিতা ঘোষ প্রমুখ অভিভাবকদের দাবি- তাঁদের সন্তানদের প্রথম শ্রেণীতে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়েই ভর্তি হতে হয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তখন তাঁরা জানতেন, প্রত্যেককেই সরাসরি পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি নেওয়া হবে। সেজন্যই ৪ বছর ধরে তাঁরা এই স্কুল এই ছেলেদের পড়িয়েছেন। তাঁদের এও দাবি, কর্তৃপক্ষও ২০২২ সালে নির্দেশিকাতে জানিয়েছিলেন, ১১৪ জন পড়ুয়ার মধ্যে ৯০ জনকে সরাসরি পঞ্চমী শ্রেণীতে ভর্তি নেওয়া হবে। হঠাৎ করে পুজোর ছুটি পড়ার আগের দিন সন্ধ্যাতে নতুন করে নির্দেশিকা দিয়ে জানানো হয়, ১১৪ জনের মধ্যে প্রথম ৫০ জনকে নম্বর বা মেধার ভিত্তিতে সরাসরি ভর্তি নেওয়া হবে। বাকিদের প্রবেশিকা পরীক্ষাতে বসতে হবে। আর এর বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন অভিভাবকরা। তাঁদের দাবি, কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশিকা জারি করে ‘অনৈতিক’ কাজ করেছেন। যতদিন না এই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হয়, তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এই বিষয়ে তাঁরা প্রশাসন তথা জেলা শিক্ষা দপ্তরের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন। অন্যদিকে, এই বিষয়ে মিশন কর্তৃপক্ষের কোন প্রতিক্রিয়া না পাওয়া, গেলেও রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের এক শিক্ষক বলেন, “মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবন তার ঐতিহ্য, শৃঙ্খলা ও গরিমা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। তাই, প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে বাইরের ভালো ছাত্রদেরও আমাদের সুযোগ দিতে হবে। আর সেজন্যই প্রাথমিকের ১১৪ জন পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয়। সর্বোপরি, প্রাথমিকের (চতুর্থ শ্রেণীর) সকলকেই উচ্চ বিদ্যালয়ে সুযোগ দিতে হবে, এরকম কোন নির্দেশিকা বা আইন নেই।”