দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ জুলাই: মেদিনীপুর পৌরসভা (Midnapore Municipality) সহ রাজ্যের একাধিক পৌরসভায় ‘পৌরপ্রধান’ (Chairman) পরিবর্তন কি এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা? বদলাতে চলেছে দলের শহর সভাপতি (Town President)-ও? একুশের মঞ্চ থেকে অন্তত তেমনই বার্তা দিয়ে রাখলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড (দলীয় মুখপাত্রদের কথায় ‘সেনাপতি’) তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, “আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে কথা দিচ্ছি, নির্বাচনে যাঁরা পঞ্চায়েত বা পৌরসভার পদে থেকেও মানুষকে বোঝাতে অক্ষম হয়েছেন বা তাঁদের এলাকা থেকে প্রত্যাশিত ফল হয়নি; তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঠিক একইভাবে আমরা টাউন সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব।”
একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আমি নির্বাচনের আগে যখন পর্যালোচনা বৈঠকে গিয়েছিলাম, বলেছিলাম, নির্বাচনের পর দল কিন্তু প্রত্যেকের ভূমিকার পর্যালোচনা করবে। পৌরসভা আর পঞ্চায়েত ভোটের সময় আপনারা নিজেদের টিকিটের জন্য লড়বেন; আর যখন লোকসভা বা বিধানসভা ভোট আসবে তখন দল যদি আপনার এলাকায় আশানুরূপ ফল না করে, তবে দল আপনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে। যতবড় নেতার ছত্রছায়াতেই থাকুন না কেন! পঞ্চায়েতে, পৌরসভায় আপনি নিজের ভোটে খেটে জিতবেন আর লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের সময় ভাববেন পার্টি দেখে নেবে; মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটা করে সভা করে যাবেন, তাহলেই জিতে যাবেন! সেটা চলবে না। নিজের ভোটে যেমন পরিশ্রম করেন, তা-ই করতে হবে। যাঁরা করেননি, নিষ্ক্রিয় থেকেছেন; সেই সব পর্যালোচনার কাজ শেষ। তিন মাসের মধ্যেই এর ফল দেখতে পাবেন।” আর এখানেই ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছেন রাজ্যের একাধিক পৌরসভার চেয়ারম্যান, শহর সভাপতি থেকে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত বা অঞ্চলের প্রধান ও অঞ্চল সভাপতিরা! বলাই বাহুল্য, রাজ্যের বেশিরভাগ শহর বা পৌর এলাকায় লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফলাফল করতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। আরও খোলসা কলে বললে, রাজ্যের প্রায় বেশিরভাগ শহর বা পৌর এলাকাতেই বিজেপি-র থেকে পিছিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস। অবশ্য বিভিন্ন লোকসভার অধীন, একাধিক অঞ্চলেও খারাপ ফলাফল হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই, দল তথা সংগঠনের একেবার শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে ‘বার্তা’ স্পষ্ট করে দেওয়ার পর মেদিনীপুর, খড়্গপুর, তমলুক, কাঁথি, ঘাটাল, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর থেকে শুরু করে রাজ্যের প্রায় বেশিরভাগ শহর তথা পৌরসভার পৌরপ্রধান ও শহর সভাপতি এবং বিভিন্ন অঞ্চলের (বা গ্রাম পঞ্চায়েতের) প্রধান ও অঞ্চল সভাপতি পরিবর্তন এখন যে কেবল সময়ের অপেক্ষা মাত্র; তা মানছেন জেলার নেতারাও। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেন, তাই করেন।”
হয়তো ‘প্রমাদ’ গোনা শুরু হয়েছে মেদিনীপুর আর খড়্গপুর শহরেও। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরই জানা গিয়েছিল, মেদিনীপুর শহরের (পৌরসভার) ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টি ওয়ার্ডেই পিছিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস! খোদ পৌরপ্রধান সৌমেন খানের ওয়ার্ডেই (১৮) প্রায় ১১০০ ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডব (১৯) এবং শহর মহিলা সভানেত্রী মৌ রায়ের ওয়ার্ডেও (৫) যথাক্রমে ৮০০ ও ২৪৩ ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। এমনকি, লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী জুন মালিয়া-র মেদিনীপুর শহর নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক তথা মেদিনীপুর পৌরসভার সিআইসি (পূর্ত দফতর) সৌরভ বসু’র ওয়ার্ডেও (৯) ২০টি ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। এছাড়া, ৪,৬,৭,৮,১০, ২০, ২৪, ২৫- প্রভৃতি ওয়ার্ডগুলিতে বড়সড় ব্যবধানে পিছিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা-র ওয়ার্ডেও (২২) পৌর ভোটের ৩ হাজারের লিড কমে হয়েছে ৪২১। স্থানীয় বিধায়ক-ই লোকসভার প্রার্থী (জুন মালিয়া-র) হওয়া সত্ত্বেও মেদিনীপুর শহরে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন জুন মালিয়া। এই পরিস্থিতিতে নিজের ওয়ার্ডে এবং গোটা শহরে পিছিয়ে থাকার কারণে মেদনীপুরের পৌরপ্রধান সৌমেন খান এবং শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডবের পদে কি কোপ পড়া নিশ্চিত? সূত্রের খবর ঠিক তেমনটাই। নতুন পৌরপ্রধান বা শহর সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গেছে! অন্যদিকে, ‘রেলশহর’ খড়্গপুরের (খড়্গপুর পৌরসভার) ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৪টি ওয়ার্ড (৩,৪,৫ ও ২৭) ছাড়া বাকি ৩১টিতেই বিজেপি-র কাছে পর্যদুস্ত হলেও, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় অনেক ভাল ফল করেছে তৃণমূল। স্বাভাবিকভাবেই পৌরপ্রধান কল্যাণী ঘোষের ‘পদ’ হয়তো কোনভাবে বেঁচে যেতে পারে বলেই সূত্রের খবর! আর, খড়্গপুর শহরে এমনিতেই এখন শহর সভাপতি কেউ নেই। সূর্যপ্রকাশ রাও ‘পদ’ থেকে অব্যাহতি নিয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। তীব্র গোষ্ঠী-কোন্দলের মধ্যে খড়্গপুর শহরের নতুন সভাপতি কে নির্বাচিত হন, সেদিকেও লক্ষ্য থাকবে সকলের! এই বিষয়ে তৃণমূলের জেল সভাপতি সুজয় হাজরার সঙ্গে রবিবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “আমাদের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কি বলেছেন, আপনারা সবাই তা আজকে শুনেছেন। কিন্তু, যেটা বলার বিষয় সেটা হল, নির্বাচনের আগেই তিনি প্রতিটি বৈঠকেই আমাদের জানিয়েছিলেন, যাঁরা এই নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় থাকবে বা কোথাও অন্তর্ঘাতের চেষ্টা করবে বা নিজেদের এলাকায় ভালো ফলাফল করতে পারবে না; তাদেরকে পদ ছাড়তে হবে। দল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকে আমি বারবারই সেটা আপনাদের বলার চেষ্টা করেছি। সেই তালিকাও প্রস্তুত হয়ে গেছে। সিদ্ধান্ত জানার জন্য আগামী তিন মাস আপনাদেরকেও অপেক্ষা করতে হবে, আমাদেরকেও।”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২২ নভেম্বর: আইআইটি (IIT)-র মতো বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে অভাব…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ নভেম্বর: দোকান বন্ধ করে রাতেই বেরিয়েছিলেন বাইক নিয়ে।…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…