দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জানুয়ারি: নিজে একজন প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্মী। জেলা শহর মেদিনীপুরের মিত্র কম্পাউন্ডের বাসিন্দা বছর ৬২-র প্রদীপ কুমার রায় অবসরের পর প্রায় প্রতিদিনই স্ত্রী-কে আনতে যেতেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পিড়াকাটাতে। বছর ৫৫-র স্ত্রী স্বপ্না হালদার (রায়) পিড়াকাটা বঙ্গীয় গ্রামীন বিকাশ ব্যাঙ্কের একজন কর্মী (ক্যাশিয়ার)। সোমবার বিকেলেও নিজেদের গাড়িতে করে তাঁরা ফিরছিলেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন প্রদীপ বাবুই। হঠাৎই ভদুতলা লাগোয়া বুড়িশোলের জঙ্গল এলাকায় (বিকেল সাড়ে ৪-টা নাগাদ) রাজ্য সড়কের উপর নিয়ন্ত্রণ হারায় তাঁদের গাড়ি! আর, সেই সময়ই মেদিনীপুর থেকে পিড়াকাটার দিকে যাচ্ছিল একটি যাত্রীবাহী বাস। বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে তাদের ব্যক্তিগত চারচাকা গাড়িটি। আর তাতেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ওই দম্পতির!
আগুনের তীব্রতা এতখানি ছিল যে ঘটনাস্থলে পুলিশ কিংবা দমকল থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা অবধি পৌঁছনোর আগেই একপ্রকার পুড়ে ছাই হয়ে যায় ব্যক্তিগত ওই প্রাইভেট কার বা অভিজাত চারচাকা গাড়িটি। জঙ্গল অধ্যুষিত ওই রাস্তায় মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই দাউ দাউ করে আগুন লেগে যাওয়ায়, তাঁদের জীবিত বা আহত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে পুলিশ ও দমকলের তরফেও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে! বিকেল সাড়ে ৫-টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে তাঁদের (মৃত দম্পতির) দগ্ধ ও দলাপাকানো দেহ উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় পুলিশের তরফে। শালবনী থানা ও মেদিনীপুর দমকল বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে পুলিশের তরফে।
সোমবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পৌঁছে মৃত দম্পতির মেয়ে রোশনি রায় বাবা-মা’র দেহ শনাক্ত করেছেন বলে পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। তবে, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় বাবা-মা’কে একসঙ্গে হারিয়ে শোকে একপ্রকার মূর্ছা যাচ্ছেন পেশায় খড়্গপুর গ্রামীণের চাঙ্গুয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক রোশনি! অন্যদিকে, ঠিক কি কারণে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা, তা পুলিশের তরফে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রাইভেট কারের চাকা ফেটে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলেই ঘটেছে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা!