দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ এপ্রিল:এলাকায় মাও আতঙ্ক তৈরি করে, নিছকই নিজেদের স্বার্থ পূরণ করাই ছিল উদ্দেশ্য। মোট ৮ জন দুষ্কৃতী-কে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে, বৃহস্পতিবার রাতে এবং শুক্রবার দুপুর মিলিয়ে মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মেদিনীপুর আদালতে তোলা হলে, প্রত্যেকের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতার গনগনি থেকে উদ্ধার হয়েছিল মাও নামাঙ্কিত পোস্টার। যেখানে ভূমিহীন আদিবাসীদের পাট্টার দাবি করা হয়েছিল! সেই ঘটনাতেই জেলা পুলিশ, গড়বেতা থানা এবং চন্দ্রকোনা রোড বিট হাউসের যৌথ তদন্তে জয়ন্ত সামন্ত, সুশান্ত ঘোষ সহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১ জনের খোঁজে চলছে তল্লাশি। উল্লেখ্য যে, ধৃতদের মধ্যে ঝাড়গ্রামের ৩ জন দুষ্কৃতী আছেন। বাকিরা গড়বেতা এলাকারই বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।

thebengalpost.net
৭ দুষ্কৃতী গ্রেফতার :

উল্লেখ্য যে, গত ২১ এপ্রিল গড়বেতার গনগনি এবং তারপর চন্দ্রকোনা, পিড়াকাটা প্রভৃতি পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় পড়েছে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার। তার আগে শালবনীর রঞ্জার জঙ্গলে উদ্ধার হয়েছে ল্যান্ডমাইনের মতো ধাতব পদার্থ। অন্যদিকে, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া জেলাতেও পড়ছে এই ধরনের পোস্টার। পাওয়া গেছে নকল মাইন। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সেই সূত্র ধরেই শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, “প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা তদন্ত করে দেখতে পাচ্ছি, শুধুমাত্র নিজেদের কিছু স্বার্থ পূরণ করার জন্যই মাও আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা চলছে। গড়বেতার এই দুষ্কৃতীরাও অতীতে বা বর্তমানে মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত নয়। শুধুমাত্র নিজেদের অভিসন্ধি পূরণের লক্ষ্যে এলাকায় মাও আতঙ্ক তৈরি করতে চেয়েছিলেন।” এও জানা গেছে, ধৃত দুষ্কৃতীদের ১ জন আবার এলাকায় অবৈধ বালি পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু, বর্তমানে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, পুলিশ ও এলাকাবাসী মনে আতঙ্ক তৈরি করে, ফের নিজের অসৎ ব্যবসার প্রসার বাড়াতে চেয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে! আরও ২-১ জন আছে যারাও নানা ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। গত ১৯ ও ২০ এপ্রিল ঝাড়গ্রামের দুই দুষ্কৃতী-কে সঙ্গে নিয়ে তারা এইসমস্ত এলাকায় লাল কালির পোস্টার চিটিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল বলে এসপি জানিয়েছেন। তবে, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লান কুসুম ঘোষ, ডিএসপি (অপারেশন) দুর্লভ সরকারের নেতৃত্বে গড়বেতা থানা ও চন্দ্রকোনা রোড হাউস যৌথ তদন্তে নেমে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করে। পুলিশের ওই টিমকে ১০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে বলে পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন।