দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম, ২১ নভেম্বর: দীর্ঘদিন পর মাওবাদীদের ডাকা বনধে মিশ্র প্রভাব পড়ল পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গল অধ্যুষিত ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর প্রভৃতি জেলায়। তবে, ঝাড়খণ্ড রাজ্যে রেললাইন উড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও, এরাজ্যে এমন কিছু হয়নি! শনিবার (২১ নভেম্বর) মাওবাদীদের ডাকা “ভারত বনধ”- এ ঝাড়গ্রাম জেলা সহ জঙ্গলমহলের বিভিন্ন অংশে মোটামুটি প্রভাব পড়েছে। লালগড়, বেলপাহাড়ি, বাঁশপাহাড়ি, বিনপুর প্রভৃতি এলাকার বাজার, দোকানপাট, যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল ছয়টা থেকে শুরু হওয়া ২৪ ঘন্টার বন্ধে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। শান্তিপূর্ণ ভাবেই মাওবাদীদের বন্ধ পালিত হয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার ওই সমস্ত এলাকায়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একসময়ের মাও অধ্যুষিত ভীমপুর এবং সংলগ্ন জঙ্গল অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে মিশ্র প্রভাব পড়েছে এই বন্ধের। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ঝাড়খন্ডে মাওবাদী শীর্ষ নেতা ও সংগঠনের পলিটব্যুরো সদস্য “কিষানদা” ওরফে প্রশান্ত বসু সস্ত্রীক পুলিশের জালে ধরা পড়েন। কিষানদা গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দেশজুড়ে পাঁচদিনের “প্রতিরোধ দিবস” পালনের ডাক দিয়েছিল মাওবাদীরা। শনিবার মাওবাদীরা 24 ঘন্টার “ভারত বনধে”র ডাক দিয়েছে। এই বনধে জঙ্গলমহলের বিনপুর, বেলপাহাড়ি, লালগড়, জামবনি, নয়াগ্রাম থানা এলাকাতে বনধের প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। সিপিআই (মাওবাদী)-র পূর্বাঞ্চলীয় মুখপাত্র সঙ্কেত প্রতিরোধ দিবস ও বনধের ঘোষনা করেছিলেন।

thebengalpost.net
ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বনধের মিশ্র প্রভাব :

অন্য দিকে, ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলাতে আগেই “হাই এলার্ট” জারী করে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি ‘চেকিং পয়েন্ট’ বানিয়ে যানবাহন চলাচলে নজরদারি কড়াকড়ি করা হয়েছে। এদিকে, মাও বনধের প্রভাব পড়ায়, স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছে বিজেপি, সিপিআইএম এবং কংগ্রেস। জঙ্গলমহলের প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি বলে তাদের দাবি। প্রকৃত মাওবাদীদের পরিবর্তে, শাসকদলের কর্মী-সমর্থকদের চাকরি দেওয়া হয়েছে! অভিযোগ উড়িয়ে ঝাড়্গ্রাম জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মাওবাদীদের কোন অস্তিত্ব নেই। তারা এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে সামিল হয়েছেন। কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী বিরোধী শক্তি এসব দাবি করছে। অন্যদিকে, মাওবাদী বন্ধের কোনো প্রভাব পড়ল না পুরুলিয়া জেলায়। পুরুলিয়া জেলার সদর শহর এবং গ্রাম অঞ্চলে জনজীবন ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। কিসান দা ওর্ফে প্রশান্ত বোসের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজকে বন্ধ ডাকে মাওবাদীরা। পুরুলিয়া জেলায় গত কয়েক বছরে মাওবাদীদের তেমন কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। তবু ঝুঁকি না নিয়ে ঝাড়খণ্ড সীমান্তে ব্যাপক পাহারার ব্যবস্থা করে পুলিশ। নাকা তল্লাশি চালানো হয় প্রধান সড়কগুলোতে। পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারীকরা পরিস্থিতির দিকে বিশেষ নজরদারি চালান। তবে অপ্রীতিকর কোন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

thebengalpost.net
ঝাড়খণ্ডের রেললাইন :