দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ নভেম্বর: ২০০০ সালের আগেই গ্রাম ছেড়েছেন। সেই থেকেই যোগাযোগ নেই পরিবারের সঙ্গে। তবে, পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহল এলাকায় ২০০৬-০৭ সাল থেকে যখন মাওবাদীদের প্রভাব বাড়ছিল ধীরে ধীরে, সেই সময় থেকেই অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের (ঝাড়গ্রাম সহ) বিভিন্ন এলাকায় তাঁকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। রাজ্যে পালাবদলের পর অর্থাৎ ২০১১’র পর থেকে ফের উধাও হয়ে যান তিনি! এরপরই, ঝাড়খণ্ড সহ মাও অধ্যুষিত বিভিন্ন রাজ্যে তাঁর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অস্তিত্ব পান গোয়েন্দারা। ‘কুখ্যাত’ সেই মাওবাদী নেতা মদন মাহাতোর খোঁজে বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিল ঝাড়খণ্ড পুলিশের একটি দল। বৃহস্পতিবার সকালে ঝাড়খণ্ড পুলিশের ওই দলটি পৌঁছে যায় মদন মাহাতোর শালবনীর বাড়ির ঠিকানায় অর্থাৎ শালবনী ব্লকের কাশিজোড়া অঞ্চলের করমশোল (পড়াশিয়া) এলাকায়। খোঁজ খবর নেন মদন মাহাতোর বিষয়ে। কথা বলেন এলাকাবাসী ও পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে।

thebengalpost.net
মদন মাহাতোর গ্রামে ঝাড়খণ্ড পুলিশের নোটিশ:

অকৃতদার (বিয়ে করেননি) মদনের ভাই, ভাইপো প্রমুখকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় বলে জানা গেছে। এরপরই, ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের নির্দেশ সম্বলিত নোটিশ চিটিয়ে দেওয়া হয় ওই এলাকায়। গ্রামের বিভিন্ন স্থানে একাধিক নোটিশ চেটানো হয়। নোটিশে মদন মাহাতোর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য একাধিক ধারায় মামলার উল্লেখ রয়েছে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই মাও নেতা মদন মাহাতোর খোঁজ চালাচ্ছে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকার পুলিশেরা। সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের নির্দেশেই ঝাড়খণ্ড পুলিশ তাঁর বাড়ি করমশোল গ্রামে আসে। ঝাড়খণ্ড রাজ্যে ঘটে যাওয়া একাধিক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বা মাওবাদী হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে মদন মাহাতোর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে দাঙ্গা লাগানো, সরকারি কাজে বাধা দান, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, খুন বা হত্যার চক্রান্ত প্রভৃতি জামিন অযোগ্য একাধিক ধারায় (147/148/149/353/307 IPC/3/4 PP Act প্রভৃতি) মামলা রুজু হয়েছে ঝাড়খণ্ড রাজ্যে। সেই সমস্ত মামলার উল্লেখ করে নোটিশ চেটানো হয়েছে গ্রামে। মাওবাদী নেতা মদন মাহাতোর খোঁজ দেওয়ার জন্য একটি ফোন নং (Contact No.) এবং ইমেল আইডি (Email Id)-ও দেওয়া রয়েছে নোটিশে।

তবে, তাঁর পারিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘ ২২-২৩ বছর বছর আগে, যখন তাঁর ১৫-১৬ বছর বয়স, তখনই মাওবাদীদের ডাকে সাড়া দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান মদন। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই মদন মাহাতোর। এমনকি, এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে তাঁর বাবা-মা’র মৃত্যু হলেও, গ্রামে আসেননি মদন। মাঝখানে পশ্চিমবঙ্গ তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের ভয়াবহ মাওবাদী সময়ে (২০০৬-২০১০) মদনের নাম শোনা গেছে বারবার। তবে, সেই সময়ও মদন তাঁর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি বলে তাঁর ভাই, ভাইপো সহ এলাকাবাসীর দাবি। তা সত্ত্বেও বছর ৪০-এর মদনের খোঁজে এলাকায় বিভিন্ন সময়ে ভিন রাজ্যের পুলিশ এসেছেন বলে দাবি তাঁর এক ভাইপোর। বৃহস্পতিবারও যেমন এসেছিলেন ঝাড়খণ্ড পুলিশের আধিকারিকরা! পরিবারের এক সদস্য বললেন, “সেই ২২-২৩ বছর আগে গ্রাম ছেড়েছে। আমরা জানিওনা আদৌ বেঁচে আছে কিনা বা কোথায় আছে। তা সত্ত্বেও পুলিশ আসে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে। আগেও এসেছে। আমরা এসবের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।”

thebengalpost.net
নোটিশ চেটানো হয়েছে গ্রামে:

thebengalpost.net
Advertisement: