দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ ডিসেম্বর: বাচিক শিল্পের প্রসার ও উত্তরণে এগিয়ে এলেন জেলা শহর মেদিনীপুরের স্বনামধন্য বাচিক শিল্পী ও বাংলা বিষয়ের শিক্ষক শুভদীপ বসু। তাঁর রচিত গবেষণাভিত্তিক বই ‘আবৃত্তির পাঠশালা’র উদ্বোধন বা মোড়ক উন্মোচিত হল বড়দিনের (শনিবার) সন্ধ্যায়। মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্র নিলয়ে শুভদীপ বসুর লেখা বাচিক শিল্পের ওপর এই গবেষণা ভিত্তিক গ্রন্থ ‘আবৃত্তি পাঠশালা’র উদ্বোধন করলেন বিশিষ্ট কবি দেবব্রত দত্ত। আবৃত্তির ওপর ব্যাকরণ ভিত্তিক এরকম গ্রন্থ বিরল। যাঁরা বাচিক শিল্প চর্চা করেন তাদের কাছে এই গ্রন্থ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন শিল্পীমহল। আবৃত্তি বা ছড়ার বহু বই বাজারে থাকলেও কিভাবে আবৃত্তি শেখানো হবে, আবৃত্তির ইতিহাস, বাংলা বর্ণের সঠিক উচ্চারণ, মাইক্রোফোনের ব্যবহার, সঞ্চালনা ও শ্রুতি নাটকের নিয়ম কানুন, কন্ঠস্বর, অভিব্যক্তি, বাংলার বিখ্যাত আবৃত্তি শিল্পীদের কথা, মেদিনীপুরের আবৃত্তিচর্চার ইতিহাস-উক্ত বিষয় গুলো স্থান পেয়েছে বইটিতে। শুভদীপ নিজে বাংলা বিষয়ের শিক্ষক (ঝাড়গ্রাম রামকৃষ্ণ মিশন) হওয়ায়, ছন্দ, অলঙ্কার ও ব্যাকরণের মতো বিষয়গুলিও সঠিক ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচিত হয়েছে এই বইতে।
এদিনের, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিল নতুনত্বের ছাপ। স্বয়ং সান্তা বইটির উদ্বোধনের সময় উপস্থিত হয়েছিলেন। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক বরুন মন্ডল। স্বর আবৃত্তির ছাত্র-ছাত্রীরা আবৃত্তির নানা কোলাজ পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার বিশিষ্ট সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী অমিয় পাল বইটি নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা করেন। শ্রুতি নাটক পরিবেশন করেন শুভদীপ বসু ও মণীষা পাত্র বসু। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শতাব্দী গোস্বামী ও কুমারেশ দে। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন দীপঙ্কর শিট। অনুষ্ঠানে শিবানী পাল, বর্ণালী সাহা, শর্বরী মুখার্জী, সুপর্ণা ব্যানার্জী, সোমদীপা ব্যানার্জী, অনিন্দিতা মাইতি, শিলা মহাপাত্র, দীপান্বিতা ব্যানার্জী, পুষ্পিত পাল, প্রাঞ্জলি দাশ এর আবৃত্তি সকলের নজর কাড়ে। নৃত্যশিল্পী ঈশিতা চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায়’ দুঃসময়’ অনুষ্ঠানে অন্যমাত্রা এনেছিল। অনুষ্ঠান শেষে শুভদীপ বসু বলেন “বহুদিন ধরে এরকম একটি কাজ করার ইচ্ছে ছিল। আবৃত্তির ওপর ব্যকরণভিত্তিক বই। যাঁরা শিল্প চর্চা করেন, তাঁদের এই বই যদি কাজে লাগে আমার পরিশ্রম সার্থক হবে”। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন রাজশেখর সিংহ, প্রকাশনায় ‘কবিতিকা’। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শুভদীপের আবৃত্তি সংস্থা ‘স্বর ও আবৃত্তি’র অন্যতম দুই সদস্য তথা বাবা ও মা দীপক বসু ও দীপা বসু।