দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ২১ সেপ্টেম্বর: প্রশ্ন ছিল, “রাজ্য সরকার (মুখ্যমন্ত্রী) বলছে, কারুর চাকরি যেতে দেবেন না! আপনি কি বলবেন?” বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অকপটে জানালেন, “অত্যন্ত ভুল কথা! সবার চাকরি যাবে। যারা দুর্নীতি করে ঢুকেছে, ধরতে পারলেই তাদের সবার চাকরি যাবে। আর, আমি বিশ্বাস করি, ধরা যাবে। যারা দুর্নীতি করে ঢুকেছে, তারা যেন নিশ্চিন্তে না থাকে!” সোমবার রাত্রি ৮-টায় সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে, মুখোমুখি সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর একটাই লক্ষ্য- “দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই!” আর, তিনি অকুতোভয়! তাই, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন। তাঁর উপলব্ধি, “দুর্নীতি ভারতবর্ষকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর ভারতের কোন বিচারপতি তাঁর কার্যকালের মেয়াদের মধ্যে এভাবে মুখোমুখি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বলে, নজির নেই! এমনটাই দাবি করে, এই সাক্ষাৎকারের বিরুদ্ধে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি’র বেঞ্চে মামলাও হয়। তবে, প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ সেই মামলা একাধিক কারণে খারিজ করে দিয়ে, বিচারপতির ‘দায়িত্ব ও কর্তব্য’- এর উপর-ই আস্থা রেখেছেন। অন্যদিকে, ব্যাঙ্গালোর প্রোটোকল মেনেই তিনি যে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন, তা সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন, তিনি মূলত দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইয়ের কথাই ব্যক্ত করেছেন। তাঁকে বিচার ব্যবস্থা থেকে বহিষ্কার করে দিলেও, তাঁর লড়াই যে থামবে না, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন এই ব্যতিক্রমী এবং অকুতোভয় মানুষ-টি! তবে, যতদিন তিনি বিচারপতি হিসেবে থাকবেন, ততদিন যে অঙ্কিতা অধিকারীর মতো ‘ঘুরপথে’ চাকরি পাওয়াদের তিনি রেয়াত করবেন না, সে বিষয়টি এদিন তিনি সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করে দিয়েছেন। একইসঙ্গে, বিচারব্যবস্থা বা বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ‘আলটপকা’ মন্তব্য বা মিথ্যা কথা-ও তিনি যে সহ্য করবেন না, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন।