দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ২৪ নভেম্বর:”কার নির্দেশে অযোগ্যদের জন্য অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছে? এটা নিশ্চয়ই স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাথায় আসেনি। এর পেছনে অন্য কোনো মাথা আছে!” বুধবার (২৩ নভেম্বর) সিবিআই (CBI)-কে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সেই ‘মাথা’র খোঁজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর, আজ (২৪ নভেম্বর), বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা’র মধ্যে শিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিবকে তাঁর এজলাসে হাজিরা দিতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই নির্দেশ দেওয়ার সাথে সাথেই রাজ্যের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী সহ শাসকদলের কিছু (নাকি একজন?) ‘মুখপাত্র’কেও নাম না করে তুলোধুনা করেছিলেন বিচারপতি। তাঁর পর্যবেক্ষণ ছিল, “আমি কিছু দালাল, যারা মুখপাত্র বলে পরিচিত এবং কিছু মন্ত্রীর নাম বলতে পারি, যাঁরা প্রকাশ্যে বলেছেন কারও চাকরি যাবে না।” এরপরই, রাতারাতি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে এস এস সি (School Service Commission) ও রাজ্য সরকার। তবে, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ-ই বহাল রেখেছেন।

thebengalpost.net
সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অযোগ্যদের বা বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকদের যাতে চাকরি না যায়, সেজন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে কয়েক হাজার অতিরিক্ত পদ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, রাজ্য সরকারের নির্দেশে। সেই নিয়োগের কথা শুনে প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তিনি তাই কর্মশিক্ষা ও শরীরশিক্ষা নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আগেই। এর পর, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-ও চরম ক্ষুব্ধ হয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বুধবার। তলব করেছিলেন শিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিবকে। বৃহস্পতিবার, অযোগ্যদের বেআইনিভাবে নিয়োগের আবেদন এবং সচিবকে হাজিরা দেওয়া সহ সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আলাদাভাবে মামলা দায়ের করে এসএসসি ও রাজ্য সরকার। এদিন দুটি মামলারই শুনানি হয় হাইকোর্টের বিচারপতি বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। “অযোগ্যদের বাঁচাতে বেআইনিভাবে অতিরিক্ত পদ তৈরি করে নিয়োগের আবেদন” শুনেই স্তম্ভিত হয় ডিভিশন বেঞ্চ। সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রেখে ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “হাইকোর্ট সচিবকে তলব করতেই পারে। এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করার কি আছে?” শুধু তাই নয়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের এই ‘অনৈতিক সিদ্ধান্ত’ বা ‘অযোগ্যদের বাঁচানোর চেষ্টা’র পেছনে যে মাথা আছে, তাঁকে খুঁজে বের করার নির্দেশও বহাল রেখেছেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিবিআই-কে। তবে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশও চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। মামলার শুনানি শুক্রবার হতে পারে বলে জানা গেছে।