মণিরাজ ঘোষ, খড়্গপুর, ২৯ মে : “ওরা বীর/ ওরা আকাশে জাগাত ঝড়!” কিশোর কবি সুকান্ত’র সৃষ্টি আজ মেদিনীপুর-খড়্গপুরের মুখে মুখে। ভারতমাতার বীর সন্তান সেনা জওয়ান বাপ্পাদিত্য খুটিয়া’কে শেষ বিদায় জানাল তাঁর জন্মস্থান, তাঁর শহর খড়্গপুর। কেন্দ্রীয় বাহিনী’র গান স্যালুট, রাজ্য পুলিশের গার্ড অফ অনার আর আপামর মেদিনীপুরবাসীর জয়ধ্বনি-তে, মুখ ভার হয়ে থাকা আকাশের বুক থেকে যেন ঝরে পড়ল দেশমাতৃকার আশীর্বাদ স্বরূপ পুষ্পবৃষ্টি! হৃদয়ে এক সমুদ্র শোক চেপে রেখেও, হাসিমুখে বাপ্পাদিত্য’র বাবা তথা প্রাক্তন RPF জওয়ান সুকুমার খুটিয়া বললেন, “আরও গর্বিত হতাম, যদি দুর্ঘটনায় নয়, আমার ছেলে যুদ্ধ করতে গিয়ে শহীদ হত!” তিনি এও বললেন, “চিন্তা শুধু আমার একরত্তি নাতনি (মাত্র ১১ মাসের)-টাকে নিয়েই!”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২৭ মে, শুক্রবার লাদাখে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বাপ্পাদিত্য খুটিয়া সহ ৭ ভারতীয় জওয়ানের। বাংলার একমাত্র জওয়ান হিসেবে ‘অমরত্ব’ লাভ করেন! আজ, রবিবার, দিল্লি থেকে কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে, দুপুর ঠিক ১২ টা ৪৫ নাগাদ খড়্গপুরের (২৫ নং ওয়ার্ড) বারবাটিয়াতে এসে পৌঁছয় বাপ্পা’র তেরঙ্গাবৃত কফিনবন্দী দেহ। শেষ বিদায় জানাতে হাজারো মানুষের ঢল নামে! বারবেটিয়া বাজার থেকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাপ্পাদিত্য খুটিয়া’র তেরঙ্গা পতাকায় মোড়া, কফিনবন্দী দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে। রাস্তার দু’ধারে তখন ফুল-মালা হাতে দাঁড়িয়ে প্রতিবেশী সহ আপামর খড়্গপুরবাসী। চোখে জল নিয়েও, জয়ধ্বনি দিতে দিতে তাঁদের প্রিয় বাপ্পাকে শেষ বিদায় জানান তাঁরা। দুপুর ঠিক ১ টা ১৫ নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনী’র জওয়ানরা বাপ্পার কফিনবন্দী দেহ তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা! ধরে রাখা যায়না, মা ও স্ত্রী-কে। একরত্তি কন্যা সন্তান (১১ মাসের) কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার বাবা আজ তারাদের দেশে! তবে, একজন জওয়ানের গর্বিত বাবা’র মতোই হৃদয়ে শোক চেপে রেখে, বাপ্পার বাবা তথা অবসরপ্রাপ্ত রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ান সুকুমার খুটিয়া হাসিমুখে বিদায় জানান ছেলেকে! তাঁর একটাই আফসোস, দুর্ঘটনায় নয় যুদ্ধক্ষেত্রে ছেলের মৃত্যু বলে তিনি আরও গর্বিত হতেন!
শেষ বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পা হোন্নাইয়া, খড়্গপুরের (সদর) বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়, পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি, খড়্গপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার, কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ, শাসকদলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা প্রমুখ। ছিলেন জেলা পুলিশের আধিকারিকরাও। কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ, শাসকদলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা প্রমুখদের সঙ্গে কথা বলার সময়, বাপ্পাদিত্য’র বাবা অবসরপ্রাপ্ত রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ান সুকুমার খুটিয়া শুধু একটাই আক্ষেপ করেন, “আমার ১১ মাসের নাতনি-কে নিয়েই শুধু দুঃশ্চিন্তা!” সর্বোতভাবে, পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন সুজয়রা। দুপুর সাড়ে তিনটা নাগাদ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে কৌশল্যার কালী মন্দির শ্মশান ঘাটে বাপ্পার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তার আগে, রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়, গার্ড অফ অনার। এরপর, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা বাপ্পাকে গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেই সময় আকাশের-ও মুখ ভার, সবার চোখে জল!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২২ নভেম্বর: আইআইটি (IIT)-র মতো বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে অভাব…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ নভেম্বর: দোকান বন্ধ করে রাতেই বেরিয়েছিলেন বাইক নিয়ে।…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…