দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ এপ্রিল: ছবি তুলতে গিয়ে জলে তলিয়ে যায় ‘রেল শহর’ খড়্গপুরের দুই কিশোর। ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার হলোনা দেহ! ঘটনা ঘিরে ক্ষোভ ও শোকের আবহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর টাউন থানার অধীন ১৩নং ওয়ার্ডের আরামবাটি এলাকায়। তলিয়ে যাওয়া দুই কিশোরের নাম আকাশ সিং চৌহান (১৭) ও সঞ্জীব রাও (১৯)। দু’জনেরই বাড়ি ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিমপুরা এলাকায়। আকাশ হিতকারণী হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়া বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা-সাড়ে চারটা নাগাদ চার বন্ধু মিলে আরামবাটি এলাকায় একটি মোরামখাদানে স্নান করতে এসেছিল। রেলের তরফে মোরাম তোলার পর বৃষ্টির জল জমে গভীর এক পুকুরে পরিণত হয়েছে ওই মোরামখাদান। প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস করছিল বলে সেই পুকুরে নেমে পড়ে দুই বন্ধু। বাকি দু’জন অবশ্য নামেনি। জলে নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশ ও সঞ্জীব তলিয়ে যায় বলে স্থানীয়দের দাবি। জলে নেমে তারা সেলফি তোলার চেষ্টা করছিল বলে স্থানীয়দের মধ্যে কয়েকজন দাবি করেছেন। এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরও ছেলেরা বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজ শুরু করেন। এরপরই ওই দুই বন্ধুর কাছ থেকে পুরো বিষয়টি জানতে পারেন তাঁরা। পুকুরে নেমে স্থানীয়রাই খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সেই সঙ্গে খবর দেওয়া হয় খড়গপুর টাউন থানায়। পুলিশের তরফের দমকল ও সিভিল ডিফেন্সকে খবর দেওয়া হলে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়। বেশ কয়েক ঘন্টা অভিযান চালানোর পরও দেহ মেলেনি। এরপর শুক্রবার সকাল থেকে ফের অভিযান শুরু করা হয়। নামানো হয় পেশাদার ডুবুরিও। তবে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা অবধি দেহ উদ্ধার করতে পারেননি দমকল ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। ব্যর্থ ডুবুরিরাও। শেষ পর্যন্ত ওই পুকুর বা মোরামখাদানের জল পাম্পের সাহায্যে বের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগে এদিন সন্ধ্যায় সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন স্থানীয় কাউন্সিলর নাগেশ রাও এবং খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ আধিকারিকরাও।
দুই কিশোরই সাঁতার জানতোনা বলে পরিবারের দাবি। তাদের অপর দুই বন্ধু সেজন্য তাদের বাধা দিয়েছিল বলেও স্থানীয়দের কেউ কেউ দাবি করছেন। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” স্থানীয় কাউন্সিলর নাগেশ রাও বলেন, “অনেকটাই গভীর হয়ে গিয়েছিল ওই মোরামখাদান। দুই বন্ধু সাঁতারও জানতনা। তাই জলে নামার পরই তলিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকাল থেকে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়, তবে সন্ধ্যা অবধি সাফল্য মেলেনি।” ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ‘রেল শহর’ খড়্গপুরে।