thebengalpost.net
গ্রেফতার তিন দুষ্কৃতী:

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১ জুলাই: গত ২৭ জুন, সোমবার রাত্রি ১০ টা নাগাদ ভেঙ্কট রাও ওরফে প্রসাদ রাও নামে বছর ৪২ এর তৃণমূল কর্মীকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে পালিয়ে যায় ৩ দুষ্কৃতী। ঘটনাটি ঘটেছিল, খড়্গপুর ওল্ড সেটেলমেন্ট মাতা মন্দিরের সামনে। সোমবার-ই ব্যাঙ্কক থেকে চেন্নাই হয়ে খড়্গপুরে নিজের বাড়িতে ফিরে, রাতের দিকে ‘নিজের এলাকা’ মাতা মন্দিরের সামনে বসেছিলেন প্রসাদ। স্কুটিতে করে মুখঢাকা তিন যুবক এসে, প্রসাদ-কে লক্ষ্য করে ৭-৮ রাউন্ড গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। তাঁকে উদ্ধার করে খড়্গপুর রেলওয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার তাঁর ময়নাতদন্ত হয় এবং বুধবার হয় শেষকৃত্য। সেই ঘটনাতেই, বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাতে তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ। ধৃতরা হল যথাক্রমে- শুভম সোনার, ঈশ্বর রাও, জে. কৃষ্ণা রাও। তদন্তের স্বার্থে তিনজনকে নিজেদের হেফাজতে চায় পুলিশ। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে বলে জানা যায়।

thebengalpost.net
সোমবার রাতের ঘটনা:

এদিকে, ধৃত শুভম সোনার-ও একজন সক্রিয় তৃণমূল সমর্থক বা কর্মী বলে জানা গেছে। পৌরপ্রধান প্রদীপ সরকারের হাত ধরে এই বছর-ই তৃণমূলে যোগদান করে সে। আগে বিজেপি করত বলে জানা গেছে। ২০২১-এর ১ জানুয়ারি খড়্গপুরের মথুরাকাটি এলাকায় ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা অর্জুন সোনকার নামে বছর ৩০-এর যুবক খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেলে ছিল সে। ২০২২-এর জানুয়ারি মাস নাগাদ জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর, তৃণমূলে যোগদান করে বলে জানা গেছে। সেই শুভম-কেই ফের একবার গ্রেফতার করল পুলিশ! ঘটনায় অবশ্য মুখে কুলুপ খড়্গপুর শহরের তৃণমূল নেতাদের। বেশি কিছু জানাননি পুলিশ কর্তারাও। জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার শুধু এটুকুই জানিয়েছেন যে, “খড়্গপুরের খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”

thebengalpost.net
ঘটনাস্থলের নমুনা সংগ্রহ :

তবে, শুভম সহ এই তিনজন-ই প্রকৃত খুনি কিনা তা নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা আছে! এখনও কিছুই স্পষ্ট করেনি পুলিশ। তবে, ধৃত তিনজন-ই যে কুখ্যাত দুষ্কৃতী তা মানছেন সংশ্লিষ্ট সকলেই! তবে কি রেল শহরের দুষ্কৃতীদের শাসকদল প্রশ্রয় দেয় বলে বিরোধীদের যে অভিযোগ, তাই বারবার সত্য বলে প্রমাণিত হচ্ছে? এনিয়ে, খড়্গপুরের তৃণমূল নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এমনকি জেলা নেতারাও এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না! জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানিয়েছেন, “সবাই শাসকদলের ছত্রছায়ায় আসতে চায়, এটা ঠিক। কিন্তু, এরা কি আর তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ, না এদেরকে শহরবাসী তৃণমূল নেতা হিসেবে চেনে বা জানে? তবে, দুষ্কৃতী বা অপরাধীরা অপরাধীই হয়, তাদের কোনো দল-রং হয়না। পুলিশ তদন্ত করছে। অপরাধীদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দিক, এটুকুই চাইব। এনিয়ে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।” অন্যদিকে, সিপিআই নেতা বিপ্লব ভট্ট জানিয়েছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস আর দুষ্কৃতীরাজ- শব্দ দুটো সমার্থক হয়ে গেছে। খড়্গপুর শহর দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। কেউ নিরাপদ নন!” একধাপ এগিয়ে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি অরূপ দাস জানিয়েছেন, “পুলিশ, তৃণমূল আর দুষ্কৃতী- তো একে অপরের পরিপূরক। একে অপরের নির্ভরশীল। বাকি সবটাই লোকদেখানো নাটক চলছে!”

thebengalpost.net
গ্রেফতার তিন দুষ্কৃতী, মাঝখানে শুভম সোনার: