দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২১ জানুয়ারি: পুরভোটের আগেই মেদিনীপুর-খড়্গপুর জুড়ে বিজেপি পোস্টার দিয়েছিল, মেদিনীপুরের সংসদ দিলীপ ঘোষের সাংসদ তহবিলের ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার কাজ আটকে রেখে সুদ খাচ্ছে মেদিনীপুর খড়্গপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি (MKDA)। এর মধ্যে, মেদিনীপুর পৌরসভার বকেয়া কাজ ৮ টি এবং খড়্গপুর পৌরসভার বকেয়া কাজ ১২ টি। এই পোস্টার পড়ার তিনদিনের মাথায়, বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) খড়্গপুর শহরের ২ নং ওয়ার্ডে ইন্দা আনন্দনগর এলাকার একটি পাকা রাস্তার উদ্বোধন করলেন দিলীপ। রাস্তার কাজ করেছে সেই MKDA-ই। যার বিরুদ্ধে টাকা আটকে রাখার অভিযোগ ছিল দিলীপের! ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে এই রাস্তা নির্মিত হয়েছে। গত জুন (২০২১) মাসে এই টাকা বরাদ্দ হয়েছিল এবং নভেম্বর মাসে তা সম্পন্ন হয়েছে। অন্য একটি রাস্তাও উদ্বোধন করেছেন দিলীপ। যেটি প্রায় ৩ লক্ষ টাকার। এনিয়ে, দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেছেন, “আজকে (বৃহস্পতিবার) দু’টো রাস্তা উদ্বোধন করলাম। মেদিনীপুর-খড়্গপুর মিলিয়ে এখনও ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার কাজ বাকি। রীতিমতো ঝগড়া করে এই সাড়ে ৮ লক্ষ টাকার কাজ করিয়েছি। মেদিনীপুরে ৭০ লক্ষ টাকার কাজ বাকি আছে। টাকা কারুর নয়, সরকারের টাকা, জনগণের টাকা। তৃণমূল শুধু দলবাজি করছে।”
আর, এই রাস্তা উদ্বোধনের পরই দিলীপ-কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি খড়্গপুর পৌরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপারসন প্রদীপ সরকার। শুক্রবার সকালে তিনি বললেন, “দিলীপ ঘোষ আর বিজেপি যে ভাঁওতাবাজি কথাবার্তা বলে তা প্রমাণ হয়ে গেল! যেটা কাজের কাজ সেটা নিশ্চয়ই MKDA করেছে এবং করবে। কিন্তু, এমন এমন জায়গায়, এমন সমস্ত প্রকল্প দিয়েছেন যেখানে জায়গা নিয়ে নানা জট আছে! ইচ্ছে করেই এরকম করেছেন। ফলে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু, যে কাজ করা সম্ভব, সেটা আগেও হয়েছে, এখনও হল। সেজন্যই তো উনি আগেও বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন, তার পুরভোটের আগেও রাস্তা উদ্বোধন করতে পারলেন!” যদিও, প্রদীপের দাবি উড়িয়ে বিজেপি’র রাজ্য সহ সভাপতি শমিত দাস মন্তব্য করেছেন, “বরাদ্দ হয়েছে ১ কোটি ৭০-৮০ লক্ষ টাকা, ৩০-৪০ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে। আমাদের অভিযোগ, ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার কাজ হয়নি! স্বয়ং MKDA চেয়ারম্যান তা স্বীকারও করে নিয়েছেন। প্রদীপ বাবু এসব উল্টোপাল্টা বকে লাভ নেই। আপনিই একসময় মন্তব্য করেছিলেন, দিলীপ ঘোষের তহবিলের টাকার কাজ পুরসভা করবেনা! আর, কাজ হলে সাধারণ মানুষই উপকৃত হবে, নাহলে টাকা ফেরত যাবে। এনিয়ে বিজেপি বা দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করে কোন লাভ নেই। তৃণমূল নিম্নমানের রাজনীতি করে রাজ্যবাসী জানে।” অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষের রাস্তা উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন না, এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর তথা বিজেপিরই নেত্রী সুখরাজ কাউর। একসময় এই আনন্দনগরে দাঁড়িয়েই ‘জমা জল’ নিয়ে যাঁকে কটাক্ষ করেছিলেন দিলীপ! তৃণমূল বিষয়টিকে ‘বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ বলতে চাইলেও, উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।