দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ ডিসেম্বর: “কিছু মহিলা ও সমাজবিরোধীদের দিয়ে হুমকি দিচ্ছেন, আমাদের বাড়ি ঘেরাও করার চেষ্টা হচ্ছে গত দু’তিন দিন ধরে। ইতিমধ্যে, আজ (বুধবার) সকালে ২০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পি. প্রভাবতীর বাড়ি ২-৩ ঘন্টা ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। আমরা প্রাণহানির আশঙ্কায় ভুগছি! এই সবকিছুর জন্য দায়ী পৌরপিতা প্রদীপ সরকার।” বুধবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর টাউন থানায় এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ জমা পড়ল খড়্গপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে। আর, অভিযোগ করলেন তাঁর দলেরই (তৃণমূলেরই) ১৫ জন কাউন্সিলর। অভিযোগ পত্রে সই না করলেও বা বুধবার সন্ধ্যায় পৌঁছতে না পারলেও, আরও অন্তত ৩ জন কাউন্সিলরের সমর্থন আছে এই ঘটনায়।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও না হলেও, দলের ২৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে অন্তত ১৮-১৯ জন কাউন্সিলর-ই একপ্রকার ‘অনাস্থা’ এনেছেন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করে সরাসরি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েই ক্ষান্ত হননি কাউন্সিলররা, নিজেদের মধ্যে একের পর এক বৈঠক সেরেছেন। এমনকি, বুধবার দুপুরে নিজেদের সিদ্ধান্ত বা অভিযোগ জানাতে ১৮ জন কাউন্সিলর-ই সশরীরে পৌঁছে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরে জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা ‘র অফিসে। যদিও, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার। তবে, বুধবার সন্ধ্যায় প্রদীপের বিরুদ্ধে টাউন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর এটুকু বেশ বোঝাই গেল, আর আড়ালে-আবডালে নয়, এবার প্রদীপের বিরুদ্ধে তাঁর একদা ‘ঘনিষ্ঠ’ একাধিক কাউন্সিলর সহ বিরোধী-গোষ্ঠীর সমস্ত কাউন্সিলররাই একেবারে সম্মুখ সমরে নেমেছেন! বলাই বাহুল্য, এই কাউন্সিলরদের মধ্যে অন্যতম- প্রবীর ঘোষ, কল্যাণী ঘোষ, নমিতা চৌধুরী (দেবাশীষ চৌধুরী ওরফে মুনমুনের স্ত্রী), রীতা পান্ডে (রবিশঙ্কর পান্ডের স্ত্রী), চন্দন সিং, পি. প্রভাবতী, ডি. বাসন্তী, বিষ্ণু প্রসাদ, বি. হ্যারিশ কুমার, অপূর্ব ঘোষ, রোহন দাস, দেবাশীষ সেনগুপ্ত, নার্গিস পারভিন, ফিদা হোসেন সহ প্রায় ১৮-১৯ জন আছেন। তাঁদের সঙ্গে আছেন তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি (সূর্য প্রকাশ রাও ওরফে মাস্টার জি)ও। প্রদীপের পক্ষে পূজা নাইডু, তপন প্রধান (কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে আসা), জয়শ্রী পাল (প্রাক্তন শহর সভাপতি দিপ্যেন্দু পালের স্ত্রী) সহ মাত্র ৪-৫ জন (সর্বাধিক) আছেন বলে জানা গেছে। এই বিষয়ে জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানিয়েছেন, “চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলররা। আমরা দলীয় স্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। আজ-কালের মধ্যেই বিষয়টির নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হবে।”