দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ আগস্ট: নিঃসন্দেহে চোখধাঁধানো! নীল-সাদা আলোয় রাঙা খড়্গপুর আইআইটি সংলগ্ন ফ্লাইওভার রাত্রিবেলায় মোহনীয় রূপ ধারণ করে। কিন্তু, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই “মোহনীয় রূপ” ই ক্রমে প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে পথচারীদের কাছে! ব্রিজের উপর থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটি বা বাতিস্তম্ভ থেকে এলোমেলো-অবিন্যস্ত ভাবে বেরিয়ে এসেছে বিদ্যুতের তার, ঝুলছে বিপজ্জনক ভাবে। শুধু তাই নয়, বাতিস্তম্ভের নীচে থাকা বৈদ্যুতিক-বাক্স বা মিটার বাক্স খোলা অবস্থায় পড়ে আছে। যেন এক মারণ ফাঁদ! যেকোনো মুহূর্তে বিপদে পড়তে পারেন পথচারীর! এমনিতেই ব্রিজের উপর দিনদিন দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে। আর, তার সঙ্গে বিপজ্জনক এই বিদ্যুতের খুঁটি এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে ও ঝুলে থাকা তার দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে! সঙ্গে আবার বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপনের বৈদ্যুতিক খুঁটি। আর, এসব নিয়েই এবার সৌন্দর্যায়নের দায়িত্বে থাকা খড়্গপুর পৌরসভার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শহরের সচেতন নাগরিকরা। নাগরিকদের এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন বামেরাও।
প্রসঙ্গত, দেশের সর্ববৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম খড়গপুর আইআইটি। সেই আইআইটি সহ শহরের হিজলী, প্রেম বাজার থেকে শুরু করে জেলার কেশিয়াড়ি, নয়াগ্রাম প্রভৃতি জায়গা সড়কপথে সহজে যাওয়ার জন্য এই ফ্লাইওভার নির্মিত হয়েছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট (সিপিআই) সাংসদ প্রবোধ পান্ডার উদ্যোগে। ব্রিজটিকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে, বর্তমান শাসকদলের পরিচালনায় থাকা খড়্গপুর পৌরসভা ব্রিজের দুই পাশে আলোকসজ্জিত নীল সাদা রঙের খুঁটি লাগিয়েছে। কিন্তু, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিদ্যুতের তার এলোমেলো-অবিন্যস্ত হয়ে রয়েছে। যেকোনও দিন তা বড় দুর্ঘটনার ইঙ্গিত দিচ্ছে! এনিয়ে আশঙ্কায় পথচারী থেকে শহরবাসী। রাকেশ মিশ্র নামে এক পথচারী বললেন, “দেখতে যেমন ভালো লাগে, ভয়ও হয়। শিশু, মহিলাদের নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যেকোনো মুহূর্তে বিদ্যুতের তার থেকে বিপদ বাড়তে পারে।” স্কুটি নিয়ে যাতায়াত করা, সুবর্ণা চক্রবর্তী বললেন, “অবিলম্বে এই বিষয় নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করুক পৌরসভা।” অপরদিকে, সিপিআই এর নেতা বিপ্লব ভট্ট বললেন, “আমাদের তৎকালীন সাংসদ প্রয়াত প্রবোধ পান্ডার উদ্যোগে এই ফ্লাইওভার নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু, সৌন্দর্যায়নের দায়িত্বে আছে পৌরসভা। নীল সাদা লাইট লাগিয়েছেন ভালো কথা, কিন্তু সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করুন। ভয়ংকরভাবে বিদ্যুতের তার গুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এ নিয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন, এটাই আবেদন। নাহলে আমাদেরকে পথে নামতে হবে।” বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে খড়্গপুর পৌরসভার তরফে।