দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ জানুয়ারি: ধীরে ধীরে সচল হচ্ছিল সবকিছু। সবেমাত্র খুলেছিল বড়দের স্কুল (নবম-দ্বাদশ), কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘ দু’বছর পর স্কুলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল ছোট ছোট পড়ুয়ারাও (প্রথম থেকে অষ্টম)। এর মধ্যেই আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করে কোভিড সংক্রমণ! চোখ রাঙানো শুরু করে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’। তাই, ৩ জানুয়ারি থেকে আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ফের বন্ধ হয়ে গেল স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। শুধুমাত্র ৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক কাজকর্ম চালাতে পারবে কর্তৃপক্ষ। আর, এই আবহেই ‘মিনি ইন্ডিয়া’ খড়্গপুরে ২২ তম বইমেলার উদ্বোধন হলো রবিবার বিকেলে। আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। এদিন, মেলার উদ্বোধন করলেন ঐতিহাসিক ও পুরাতত্ত্ববিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী। অন্যদিকে, আগামীকাল থেকেই রাজ্যজুড়ে কার্যত আংশিক লকডাউনের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কঠোর ভাবে কোভিড বিধি-নিষেধ পালনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিনোদনমূলক প্রায় সমস্ত কার্যকলাপই। সেই আবহে বইমেলা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়!

thebengalpost.net
মেলার উদ্বোধনে নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী :

যদিও মেলার উদ্যোক্তারা সরকারি বিধিনিষেধ মেনে মেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।‌ তবে, মেলা এবং তার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চললে, কিভাবে কোভিড বিধি মেনে চলা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন শহরবাসী। উল্লেখ্য যে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা সংক্রমণ প্রায় দ্বিগুন এর থেকেও বেশি হয়েছে। সংক্রমিত ৩৮। এর মধ্যে খড়্গপুর শহরেও একাধিকজন সংক্রমিত হয়েছেন। রবিবার এনিয়ে মেলার উদ্যোক্তাদের কাছে প্রশ্ন করলে, মেলা কমিটির সম্পাদক দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন, তাকে আমরা পূর্ণ সমর্থন করি। তবে, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। আমরা কোনভাবেই রাজ্য সরকারের বিধিনিষেধ লংঘন করবো না। কোভিড বিধি মেনে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চালিয়ে যাব।” প্রসঙ্গত, সামাজিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে মাত্র ৫০ জন উপস্থিতি গ্রাহ্য করা হয়েছে রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে। সেক্ষেত্রে খড়্গপুর বইমেলা কমিটি কি এই সংখ্যক উপস্থিতি নিয়ে এবং কোভিড বিধি মেনে অনুষ্ঠান চালাতে পারবে? যেখানে, মেলার প্রথমদিনই মাস্ক দেখা যায়নি অধিকাংশ জনের মুখে! দেখা দিয়েছে সংশয়। এদিকে, মেলার বেশিরভাগ স্টলের পুস্তক বিক্রেতারা এসে গিয়েছেন। আগামীকাল ও পরশু বাকিদের আসার কথা। তবে, একদিকে যেমন করোনা আবহে মেলা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়, অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের কতখানি বিক্রি বাটা হবে তা নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে!

thebengalpost.net
মঞ্চেও অতিথিদের মুখে দেখা যায়নি মাস্ক :

thebengalpost.net
আশা আশঙ্কার দোলাচলে ব্যবসায়ীরা :