দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২০ সেপ্টেম্বর: মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই আটকে দেওয়া হল ঝাড়খন্ড থেকে আসা সমস্ত ট্রাক। চৌরঙ্গীতে জাতীয় সড়কের উপর সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে শয়ে শয়ে ট্রাক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই কলকাতাগামী (বা, পাঁশকুড়াগামী) সমস্ত ট্রাক সহ ভারী যানবাহন আটকে দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে। পাঁশকুড়াতে ৬নং জাতীয় সড়কের উপর এক হাঁটু জল থাকার কারণেই পাঁশকুড়া দিকে কোনো ভারী যানবাহন যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে পুলিশের দাবি। যদিও, এর পেছনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঝাড়খন্ড সরকারের উপর ক্ষোভ বা ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার বার্তা আছে বলে মনে করছেন বিরোধী রাজনৈতিক মহল।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, “বৃষ্টির জলে নয়, ডিভিসি-র ছাড়া জলে বাংলা ডুবেছে। এটা ঝাড়খন্ডের জল। ঝাড়খন্ডকে রক্ষা করতে গিয়ে বাংলাকে ডুবিয়েছে ডিভিসি। ডিভিসি-র সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক আমরা ছিন্ন করে দেব। আর, তিন দিনের জন্য ঝাড়খন্ড বর্ডার (সীমানা) টোটালি লক (বন্ধ) থাকবে। যাতে কোনও ট্রাক এখন ঢুকতে না পারে! ডিজি রাজীব কুমারকে এক্ষুনি জানিয়ে দাও। কারণ, পাঁশকুড়াতে জাতীয় সড়কের উপর অনেকটা জল আছে। আমি চাইনা ট্রাকগুলো ডুবে যাক!” আর, এরপরই ঝাড়খন্ড সীমানায় ডুবুরডি চেক পোস্ট শিল করে দেওয়া হয় পুলিশের তরফে। তবে, যে সমস্ত ট্রাক ঢুকে পড়েছিল, সেগুলিকেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আটকে দেওয়া হয়। এমনই হাজার হাজার পাঁশকুড়াগামী ট্রাক চৌরঙ্গী এলাকায় দাঁড়িয়ে পড়েছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ড্রাইভার ও চালকরা। পানীয় জল, খাবারদাবারের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে! চালক-খালাসিদের দাবি, কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে পানীয় জল আনতে হচ্ছে! ট্রাকে থাকা বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে বলেও দাবি তাঁদের।
এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে সরব হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডেও আটকে দেওয়া হয় বাংলা ট্রাক। সব মিলিয়ে প্রবল চাপের মুখে শুক্রবার রাত্রি নাগাদ খুলে দেওয়া হয় বাংলা-ঝাড়খন্ড সীমান্ত। শুক্রবার রাতে বৈঠকে বসেন প্রশাসনিক আধিকারিক। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেসব জায়গায় বন্যার জল নেমে গিয়েছে, সেইসব জায়গায় সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে। এরপরই দুই রাজ্যের গাড়ি চলাচল করতে শুরু করে।