দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ এপ্রিল: পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের এক প্রান্তে সবে নির্বাচনী-বৈঠক সেরে ফিরে গিয়েছেন শাসকদলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অপর প্রান্তে ঠিক তখনই ঘটে গেল শুট আউটের ঘটনা! দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হলেন ‘রেল শহর’ খড়্গপুরের লোহার স্ক্র্যাপ আয়রনের (বা, ছাঁট লোহার) ব্যবসায়ী নারায়ণ রাও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। তাঁর দু’পায়ে মোট ৪টি গুলি লেগেছে বলে পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে। সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ ‘রেল শহর’ খড়্গপুরের আয়মা সংলগ্ন ওয়াগন শপ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে বলে পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, ঘটনার তদন্তে নেমে মাত্র ঘন্টাখানেকের মধ্যেই সমু রাজভর নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ। খড়গপুর শহর থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণেই নারায়ণ-কে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে! অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচনের আবহে শুট আউটের ঘটনায় ফের একবার চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রেল শহরে! উল্লেখ্য যে, দিন কয়েক আগেই ১৫নং ওয়ার্ডের ‘প্রাক্তন’ তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর অঞ্জনা সাঁকরে-র স্বামীর উপর হামলার ঘটনা ঘিরেও রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছিল রেল শহরে। এদিনের ঘটনাতেও স্বাভাবিকভাবেই পুলিশকে আক্রমণ করেছেন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি এদিন জানিয়েছেন, “পুলিশ যেখানে একজন বিধায়কের অভিযোগ নিতেই অস্বীকার করে, সেখানে সাধারণ মানুষকে কি নিরাপত্তা দেবে! পুলিশ তো কয়লা ভাইপো-কে আজ নিরাপত্তা দিতেই ব্যস্ত ছিল বলে শুনেছি। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা এই মমতা-পুলিশ আদৌ কখনও ভেবেছে!” তৃণমূলের তরফে অবশ্য অগ্নিমিত্রা-কে পাল্টা আক্রমণ করা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা-র মন্তব্য, “ঘটনার মাত্র ১ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। আমাদের আমলে খড়্গপুরের রেল এলাকায় দুষ্কৃতীরাজ অনেক কমেছে! মেদিনীপুরের মানুষ শান্তিতেই আছেন। উনি আসানসোলের দুষ্কৃতীরাজ বন্ধ করতে পেরেছেন কিনা সেটা ভাবুন!”
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেলে ব্যবসায়িক কাজে রেলের ওয়াগন শপ এলাকায় পৌঁছনোর পরই দুই যুবক বাইকে করে এসে বছর ৭০-র নারায়ণ রাও-কে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মোট চার রাউন্ড গুলি চালিয়ে দুই যুবক চম্পট দেয় বলে জানা যায়। নারায়ণ রাওয়ের পায়ে গুলি লাগে। সেই অবস্থাতেই তিনি নিজের মোবাইল ফোন থেকে নিজের ভাইকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান। এরপরই তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরই ঘটনার তদন্তে নেমে সোমু রাজভর নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। সূত্রের খবর অনুযায়ী, সোমু’র পরিবারও লোহার স্ক্র্যাপ আয়রন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সেই সূত্রেই কোনও শত্রুতা থেকে হয়তো সাউথ সাইড এলাকার বাসিন্দা নারায়ণ-কে টার্গেট করে সোমু! যদিও, এই বিষয়ে বিস্তারিত এখনও কিছু জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।