দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের গাফিলতিতে অন্তঃসত্ত্বা মহিলার গর্ভেই শিশু মৃত্যুর অভিযোগ! মৃত শিশু অস্ত্রপচার করে বের করলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মাতৃমা বিভাগের চিকিৎসকেরা। ঘটনা ঘিরে বুধবার বিকেলে উত্তাল হয়ে ওঠে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল চত্বর। পৌঁছয় খড়গপুর টাউন থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। সন্ধ্যা নাগাদ এই বিষয়ে সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ডঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খড়্গপুর শহরের তালবাগিচার বাসিন্দা সুদীপ দাসের স্ত্রী নিরাশা দাসের সন্তান প্রসবের দিন ছিল ৬ নভেম্বর। নির্দিষ্ট দিনে সুদীপ তাঁর স্ত্রী-কে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে চেকাপের জন্য নিয়ে এলে, চিকিৎসকেরা ভর্তি নিয়েছিলেন। কিন্তু, ৮ নভেম্বর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। জানানো হয় গর্ভস্থ শিশু সুস্থ আছে। ফের ১৩ নভেম্বর হাসপাতালে এলে বলা হয়, এখনও প্রসবের সময় হয়নি। এরপর, ১৭ নভেম্বর রাতে স্ত্রী-কে নিয়ে হাসপাতালে আসেন সুদীপ। চিকিৎসকদের জানান, গর্ভের মধ্যে শিশুর কোনো মুভমেন্ট নেই! পর দিন অর্থাৎ ১৭ নভেম্বর সকালে চিকিৎসকেরা বাইরে থেকে USG করে আনার কথা বলেন। তারপর, সেই রিপোর্ট দেখে তাঁরা জানান, গর্ভেই মৃত্যু হয়েছে শিশুর! বুধবার বিকেলে এমনই অভিযোগ করেন সুদীপ দাস। তাঁর আরও অভিযোগ, মৃত বাচ্চা অস্ত্রপচার করে বের করার কথা বললেও; মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান এই মুহূর্তে তা সম্ভব নয়! বাধ্য হয়েই তাই ১৮ নভেম্বর স্ত্রী-কে নিয়ে তাঁরা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে যান। সেখানেই মৃত বাচ্চা অস্ত্রপচার করে বের করা হয় বলে বুধবার বিকেলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা। এই বিষয়ে তাঁরা সুবিচার চেয়ে বুধবার বিকেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন। লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন।
সুদীপ বলেন, “৮ তারিখ যদি ছুটি না দিয়ে ডাক্তারবাবু সিজার করতে অথবা ১৩ নভেম্বরই ভর্তি নিয়ে নিতেন; আজ আমার সন্তানের মৃত্যু হতনা! আমি বাবা হতে পারলাম না যাঁদের জন্য; তাঁদের ফাঁসি চাই!” সন্ধ্যা নাগাদ মেদিনীপুর শহরে নিজের কার্যালয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ডঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি অবিলম্বে খোঁজ-খবর নেবেন। সেই সঙ্গে সঠিক তদন্তের বিষয়েও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।