দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ জুলাই: দানপত্রের ১৩ একর ও অধিগ্রহণের ৭ একর সহ খড়্গপুর কলেজের (Kharagpur College) মোট জমির পরিমাণ ২০ একর। কিন্তু, খাতায়-কলমে আছে মাত্র ১১ একর। বাকি ৯ একর জমি নানা ভাবে ‘বেদখল’ হয়ে গেছে! এমনই দাবি করে, শুক্রবার দুপুরে খড়্গপুর কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হল সিপিআইএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের তরফে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং খড়্গপুর কলেজেরই প্রাক্তনী। যোগ দিয়েছিলেন কলেজের একাংশ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরাও। এদিন দুপুরে বিক্ষোভ ও অবরোধ চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্থ বচসাও বাধে আন্দোলনকারীদের। বিক্ষোভ-অবরোধ কর্মসূচি শেষে, এদিন দুপুরে এই বিষয়ে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের দাবি করে খড়্গপুরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয় বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনের (SFI ও DYFI-র) পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের ২৯ আগস্ট খড়্গপুরের পুরাতনবাজারের সিলভার জুবিলি বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে অস্থায়ীভাবে খড়্গপুর কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর, খড়্গপুরের পাঁচবেড়িয়ার প্রয়াত নাসির আলী খানের স্ত্রী সালেহা খাতুন কলেজ নির্মাণের জন্য ১৩ একর জমি দান করেন। ১৯৫১ সালের ২ জুলাই রাজ্য সরকারের ডিসপারসাল প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ধীরে ধীরে দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে কলেজের প্রসার হয়। পরে ৭ একর জমি অধিগ্রহণও করা হয়। একটা সময় এই কলেজে অধ্যাপনা (১৯৫১-‘৫২ সালে, ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে) করেছেন সাহিত্যিক জীবনানন্দ দাশ। ঐতিহ্যবাহী সেই কলেজেরই জমি বেআইনিভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকি কলেজের সীমানা প্রাচীর ভেঙেও জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জমি মাফিয়া সহ জমিদাতা সালেহা খাতুনের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ ড. বিদ্যুৎ সামন্ত বলেন, “খড়্গপুর কলেজের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই একটা সমস্যা আছে। আমরা বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। বেশ কয়েক একর জমি কলেজের নামে রেকর্ড হয়নি। ফলে পুরোটা জুড়ে সীমানা প্রাচীরও দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা! সেই সুযোগ নিয়েই জমি দখল করে নিচ্ছে একটি অসাধু চক্র। এমনকি, কিছুটা অংশে প্রাচীর দেওয়ার পরও, প্রাচীর ভেঙে দেওয়া হয়েছে।”