দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ২২ সেপ্টেম্বর: ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) মামলায় রাজ্যের ‘রিভিউ পিটিশন’ বা পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্টের (Kolkata High Court) ডিভিশন বেঞ্চ (Division Bench)। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ ‘রায়’ এই মামলার রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, “রাজ্যের আবেদনের কোনও যৌক্তিকতা নেই। পুনর্বিবেচনার আর্জি গ্রহণ করা হচ্ছে না। দীর্ঘ শুনানি শেষের পর কী ভুল আছে, খুঁজে বার করা আদালতের দায়িত্ব নয়।” আদালতের বক্তব্য, “ডিটেলস এনকোয়ারি’ বা ‘স্ক্রুটিনি’ যা রাজ্য বলছে, আর প্রয়োজন নেই। রাজ্যের আবেদনের কোনও গ্রহণযোগ্যতা (মেরিট) নেই।” অর্থাৎ আগামী তিন মাসের মধ্যেই বা চলতি বছরের (২০২২) মধ্যেই বকেয়া ৩১ শতাংশ ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। অবশ্য, সরকার ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের যাওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে বলে সূত্রের খবর।

thebengalpost.net
ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ:

উল্লেখ্য যে, এই নিয়ে তৃতীয় বার রাজ্যের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করা হল আদালতে। ফলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের পক্ষেই এই রায় গেল। প্রসঙ্গত, পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)-এ ২০১৬ সালে মামলা করে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্মেন্ট এমপ্লয়িজ। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৩৪ শতাংশ হারে ডিএ পান। রাজ্য সরকার মাঝে ডিএ বাড়ালেও এখনও কেন্দ্রের তুলনায় রাজ্যের কর্মীরা ৩১ শতাংশ কম পান। এই মামলার শুনানি পর্বে হাই কোর্টকে রাজ্য জানিয়েছিল, তহবিলে টাকা নেই বলে উঁচু হারে ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু, রাজ্যের এই যুক্তি আগেও গ্রাহ্য করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে, চলতি বছরের ২০ মে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিলেন, তিন মাসের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে। কিন্ত, সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডিএ না দেওয়ায় হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যেই ডিএ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। ‘রোপা রুল’ মেনে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা মিটিয়েও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে রাজ্য! শেষ পর্যন্ত, তাদের সমস্ত দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। আগের রায়-ই বহাল রাখা হয়েছে। এই মুহূর্তে তাই সুপ্রিম কোর্ট ছাড়া আর গতি নেই রাজ্য সরকারের!