দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ মে: “আমি নবজোয়ার কর্মসূচিতে (২৭ মে, ২০২৩) শালবনীতে এসেছিলাম। আমাদের ওই অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও। ওই কর্মসূচিতে আমার যাওয়া-আসার সময়ে শালবনীর মা-বোনেরা বলেছিলেন, বাবা ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সংসার চালাতে পারছিনা! তারপর আপনারা আপনাদের অধিকারকে সামনে রেখে ভোট (পঞ্চায়েতে) দিয়েছিলেন। আমরা যতটা পেরেছি, করেছি!” বুধবার (২২ মে) বিকেলে ঝাড়গ্রাম লোকসভার অধীন শালবনী বিধানসভার অন্তর্গত চন্দ্রকোনা রোডের সভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক এভাবেই শালবনীর হাজার হাজার মহিলা সমর্থকদের উৎসাহিত করেন। একইসঙ্গে এই ইঙ্গিতও দেন, একশো দিনের বকেয়া টাকা অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাওয়া বা লক্ষ্মীর ভান্ডার ১০০০ টাকা হওয়ার পেছনে শালবনীর মা-বোনেদের অবদানও কম নয়!
বুধবার (২২ মে) ঝাড়গ্রাম লোকসভার প্রার্থী কালীপদ সোরেনের সমর্থনে আয়োজিত সভায় অভিষেক এও বলেন, “আমি চারদিন আগে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামে গিয়ে বলে এসেছিলাম, এবার বিজেপি যদি জেতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবে তপশিলী জাতির মায়েরা, ভাইয়েরা এবং তপশিলী উপজাতি তালিকা ভুক্ত মায়েরা। চারদিন আগে প্রধানমন্ত্রীও ঝাড়গ্রামে সভা করেছেন। বিজেপি তার সংকল্পপত্রে বলেছে, এবার যদি তারা ক্ষমতায় আসে তাহলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনবে। অর্থাৎ দেশে তপশিলী জাতি, উপজাতির যে অধিকার, যে সংরক্ষণ ব্যবস্থা সেটাকে তুলে দেবে। আজ কলকাতা হাই কোর্টে দু’জন বিচারপতির বেঞ্চ ওবিসি-র সংরক্ষণ তুলে দিয়েছে! সব কাস্ট সার্টিভিকেট বাতিল করে দিয়েছে! হাইকোর্টের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করে রেখেছে।” উল্লেখ্য যে, এদিন পশ্চিম মেদিনীপুর চন্দ্রকোনা রোডের সভায় বিপুল জনসমাগমে উচ্ছ্বসিত জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা, শালবনীর বিধায়ক তথা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত, গড়বেতার বিধায়ক উত্তরা সিংহ হাজরা সহ উদ্যোক্তারা।
অন্যদিকে, বুধবার (২২ মে) সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরের একটি সভা থেকে সিপিআই(এম)-র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “বামফ্রন্ট সরকার রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে গোটা দেশে একমাত্র ও সর্বপ্রথম ওবিসি সংরক্ষণকে ১৭ শতাংশ করে। সংখ্যালঘু, মূলত মুসলমান সমাজের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে যাঁরা পিছিয়ে পড়া, তাঁদের শিক্ষা এবং চাকরিতে সংরক্ষণের অধিকার নিশ্চিত করেছিল। রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের নির্দেশিত পথেই এই কাজ করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। আগে থেকেই এই সংরক্ষণের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। প্রয়াত সিপিআই(এম) সাংসদ মাসুদাল হাসান ও তৎকালীন ওবিসি কমিশনের উদ্যোগে নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের সঙ্গে ‘এ’ এবং ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ভাগ করে তালিকা করা হয়েছিল। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশান বেঞ্চের রায়ে ২০১০ সাল পর্যন্ত ওবিসি সংরক্ষণের যে তালিকা করা হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে মমতা ব্যানার্জি ওবিসি সংরক্ষণকে তছনছ করে দিয়েছে। প্রতিটি সরকারি নিয়োগে, শিক্ষায়, ভর্তিতে- কোথাও মমতা ব্যানার্জির সরকার সংরক্ষণের এই আইনকে মানেনি। তাই, হাইকোর্ট ওদের আমলের সব ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিতে বাধ্য হয়েছে।”