দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম, ২৩ নভেম্বর: মুখ্যমন্ত্রীর সাধের জঙ্গলমহল। কথায় কথায় বলেন, “জঙ্গলমহল হাসছে!” হাসি কোথায়? চরম ক্ষুব্ধ এলাকার মহিলারা! জমির মাঝখান দিয়ে আলপথে প্রায় ২-৩ কিলোমিটার হেঁটে নদী থেকে জল নিয়ে এসে রান্না করতে হচ্ছে তাঁদের। শুধু তাই নয়, ওই জলই ব্যবহৃত হচ্ছে পানীয় জল হিসেবেও। আজ থেকে হয়তো দু’তিন দশক আগে, ঠিক যেভাবে নদীতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের ঝর্না খুঁড়ে পানীয় জল বের করতে হতো, ঠিক সেভাবেই ‘অরণ্য সুন্দরী’ ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি ব্লকের ভেলাইডিহা গ্রামের ৩০০-টি পরিবারকে নদীর পাশে ঝর্ণা খুঁড়ে পানীয় জল বের করতে হচ্ছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর, বাম আমলের ৩৪ বছর, আর ‘পরিবর্তন’ এর সরকারের ১১ বছর শাসনকালের পরেও তীব্র জল সংকটে ভুগছেন এই গ্রামের মানুষ।
গ্রামের পার্বতী পাল, জ্যোৎস্না পাল, পদ্মাবতী পাল প্রমুখ মহিলাদের অভিযোগ, প্রায় ৩ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে নদী যেতে হয় পানীয় জল আনতে। প্রচণ্ড বর্ষার মধ্যেও মেঠো আলপথ পেরিয়ে, একপ্রকার কাছাড় কাছাড় খেতে খেতে তাঁদের যেতে হত! তারপর, নদীতে স্নান সেরে, নদীর পাড়ে ঝর্ণা খুঁড়ে রান্নার জল, পানীয় জল আনতে হয়। গ্রামের প্রায় ৩০০-টি পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ সহ সকলকেই এই জল পান করতে হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। স্বভাবতই, দেখা দিচ্ছে পেটের রোগ। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি বলে দাবি বছর ৬৫’র জ্যোৎস্না পাল, পার্বতী পাল থেকে শুরু করে গৃহবধূ পদ্মাবতী পালের। পদ্মাবতীর অভিযোগ, “শুনেছি নাকি বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দিচ্ছে এই সরকার। আর, আমাদের এতো বড়ো গ্রামে এই যুগে দাঁড়িয়েও নদীর জল-ই ভরসা! দু’দিন ছাড়া বাচ্চাদের পেটের রোগ হচ্ছে। একদিকে এই কষ্ট, তারপর দু’দিন ছাড়া যেতে হচ্ছে ডাক্তারের কাছে।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন (১৫ নভেম্বর) এসেছিলেন, তাঁর কানেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে অভিযোগ। তবে, এখনও সুরাহা হয়নি! স্থানীয় প্রশাসনের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, “জলস্বপ্ন প্রকল্প বরাদ্দ হলেও, জায়গার অভাবে করা যায়নি। জায়গা দেখা চলছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।” আপাতত সেই আশাতেই ভেলাইডিহা।