দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ৫ জুলাই: নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে ফের একবার উঠে এলো মেদনীপুরের নাম। “কেন মেদিনীপুরে কারা কারা লাভবান হয়েছেন, তার তদন্ত হবে না?” মঙ্গলবার সিবিআই আদালতে এই প্রশ্ন তুললেন এসএসসি নিয়োগ-কেলেঙ্কারির অন্যতম প্রধান মাথা শান্তি প্রসাদ সিনহা’র আইনজীবী। নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলার শুনানি চলাকালীন মঙ্গলবার এস.পি সিনহা’র আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত আদালতে প্রশ্ন তোলেন, “প্রায় এক বছর হয়ে গেল মামলা চলছে। আমার মক্কেল সহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু, চার্জশিটে যাঁদের নাম আছে, তাঁদের অনেকেই বাইরে আছেন। এটা কেন হবে?” এরপরই, সিবিআই-কে উদ্দেশ্য করে তাঁর প্রশ্ন, “তদন্ত শুধু কলকাতা ও দুই চব্বিশ পরগনার আশেপাশেই হচ্ছে। অথচ, এই দুর্নীতির জাল রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে আছে বলে ইডি-সিবিআই এর তরফেই দাবি করা হয়েছে। তাহলে কেন, মেদিনীপুরে কারা কারা লাভবান হয়েছে তা দেখা হবে না? গোয়েন্দারা কি সেই তদন্ত করবেন না? এরকম চলতে থাকলে, আমার মক্কেল জীবদ্দশায় এই মামলার শেষ দেখে যেতে পারবেন না!”

thebengalpost.net
শান্তি প্রসাদ সিনহা :

প্রসঙ্গত, এর আগে তাপস মণ্ডল, গোপাল দলপতি সহ রাজ্যজুড়ে নিয়োগ-কেলেঙ্কারি বা দুর্নীতির এজেন্টরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন বলে একাধিকবার দাবি করা হয়েছে ইডি ও সিবিআই- এর তরফে। ঘটনাচক্রে তাপস ও গোপাল দু’জনই পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। ২০১৮ সালে জনরোষে মৃত্যু হওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের তৎকালীন তৃণমূল উপপ্রধান নান্টু প্রধানের নামও উঠে এসেছে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে টাকা তোলার অভিযোগে। আবার, পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলাতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সৌজন্যে তাঁর স্ত্রীর নামাঙ্কিত বিসিএম ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কিংবা তাঁর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যের মামা বাড়ির লোকেদের হঠাৎ করে আর্থিক প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি এবং বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠার পেছনেও নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা আছে বলে অভিযোগ ইডি-সিবিআই এর। অন্যদিকে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া কোটি কোটি টাকার (৫০০ ও ২০০০ টাকার নোটের বান্ডিলের) বান্ডিলের মাঝে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং-এর একটি কাপড় দোকান বা বস্ত্রালয়ের (সাউ বস্ত্রালয়ের) পলিথিন প্যাকেট ঘিরেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। আবার, ২০১৬-২০১৭ সাল কিংবা তার আগে এই সরকারের আমলে হওয়া প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে স্বয়ং শুভেন্দু অধিকারীর হাত আছে বলে অভিযোগ খোদ শাসকদলের শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীদের। ২০১৬-‘১৭ সালে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে দুই মেদিনীপুরের অনেকেই মালদা, মুর্শিদাবাদে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ! এবার, নিয়োগ কেলেঙ্কারির অন্যতম মাথা শান্তিপ্রসাদ সিনহার আইনজীবীর মুখে ফের একবার মেদিনীপুরের নাম উঠে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে। ঘটনাচক্রে, এই শান্তি প্রসাদ সিনহা’র আদিবাড়িও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়!

thebengalpost.net
সবং-এর সেই সাউ বস্ত্রালয় :