দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ২৮ সেপ্টেম্বর: শুক্রবার অবধি মানিক ভট্টাচার্য-কে স্বস্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট। সিবিআই-কে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও, শুক্রবার শুনানির আগে তাঁকে গ্রেপ্তার বা তাঁর বিরুদ্ধে কোনো কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবেনা বলে জানিয়েছে বুধবার জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি উঠেছিল। তবে, গতকাল (মঙ্গলবার) শুনানি স্থগিত রাখা হয়েছিল। আজ (বুধবার) ফের দুপুর ২-টোয় শুনানি দিন ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু, এদিনও শুনানি হলোনা! মানিক ভট্টাচার্যের পক্ষ থেকে সব পক্ষকে নথি দেওয়া হয়নি বলেই শুনানি স্থগিত রাথা হয়। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব পক্ষকে যাবতীয় নথি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার বা অন্য কোনও রকমের কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। তবে, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া যেভাবে চলছে, সেই ভাবেই চলবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এদিকে, বরখাস্ত হওয়া প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি তথা বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে সাময়িক স্বস্তি পেলেও, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের শুনানির পর চরম অস্বস্তিতে স্কুল সার্ভিস কমিশন ও শিক্ষা দপ্তর তথা রাজ্য সরকার। সিবিআই যে শিক্ষক নিয়োগ তদন্তের জাল ক্রমেই গুটিয়ে এনেছে, তা এদিন তারা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে স্পষ্ট করেছে। এদিন সিবিআই-এর পক্ষ থেকে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি তদন্তের চারটি রিপোর্ট জমা করা হয়েছে। তাতে দুর্নীতির বহর দেখে স্বয়ং বিচারপতি স্তম্ভিত হয়ে গেছেন! ইতিমধ্যে, প্রায় ৮ থেকে ৯ হাজার ‘ভুয়ো’ (বা, অবৈধভাবে নিয়োগ হওয়া) শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে চিহ্নিত করতে পেরেছে সিবিআই! সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলে তাঁদের আইনজীবী জানিয়েছেন। পুজোর আগেই অর্থাৎ চলতি সপ্তাহেই সিবিআই প্রথম চার্জশিটও জমা করে দিতে পারে! সবমিলিয়ে ব্যাপক অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। যদিও, মুখ্যমন্ত্রীর ‘অনুপ্রেরণায়’ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ঘোষণা করেছেন, “ওয়েটিং লিস্টে থাকা ১৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে আমরা চাকরি দিতে প্রস্তুত আছি। সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি করা হয়েছে। আদালত বললেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে।” একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “মুখ্যমন্ত্রী চান না কারুর চাকরি যাক (অবৈধভাবে নিয়োগ হলেও!)। আমরা কারুর চাকরি খেতে চাইনা! তবে, আদালত যেমন বলবে, সেই নির্দেশ পালন করা হবে। সেক্ষেত্রে ‘ব্যতিক্রমী’ (বেআইনিভাবে বা অবৈধভাবে নিয়োগ হওয়া!) শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদেরও আমরা বাদ দিতে প্রস্তুত!”