দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ১৯ সেপ্টেম্বর: অবশেষে গ্রেফতার করা হল স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সুবীরেশ ভট্টাচার্য-কে। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এসএসসি-র চেয়ারম্যান ছিলেন সুবীরেশ। পরবর্তী সময়ে তাঁকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বসিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতিতে গত ২৫ আগস্ট তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ ছিলোই। ফের সোমবার এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির তদন্তে সুবীরেশের বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চালান সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে খবর, বেশ কয়েক ঘণ্টা ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি সুবীরেশকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকার কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই। সন্ধ্যার মধ্যেই তাঁকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হবে বলে জানা গেছে। যেখানে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শান্তি প্রসাদ সিনহা, কল্যাণময় গাঙ্গুলীরা!

thebengalpost.net
সিবিআই গ্রেপ্তার করলো সুবীরেশ ভট্টাচার্য-কে:

অন্যদিকে, পার্থ-অর্পিতা’কে গ্রেফতার (২৩ জুলাই সাত সকালেই) করার ৫৮ দিন পর শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট দিতে চলেছে ইডি (Enforcement Directorate)। এসএসসি ‘দুর্নীতি’ মামলার চার্জশিটটি সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার পাতার বলে জানা গেছে। এর মধ্যে মূল চার্জশিট ১৭২ পাতার। এর সঙ্গে রয়েছে, ছবি-সহ বিপুল পরিমাণ নথি। চার্জশিটে পার্থ এবং অর্পিতা ছাড়াও ছ’টি সংস্থার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলি হল ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট, সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড, সিমবায়োসিস, ভিউমোর হাইরাইজ প্রাইভেট লিমিটেড, অনন্ত টেক্সফ্যাব প্রাইভেট লিমিডেট এবং অপা ইউটিলিটি সার্ভিস। চার্জশিটে পার্থ, অর্পিতা এবং ছ’টি সংস্থার বিরুদ্ধে বেআইনি বেআইনি অর্থ লেনদেন প্রতিরোধ আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় ৪৩ জন সাক্ষীর উল্লেখ করেছে ইডি। দুটি ট্রাঙ্কে করে আদালতে এদিন চার্জশিট নিয়ে এসেছেন ইডি আধিকারিকরা। অপরদিকে, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি-কাণ্ডে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ‘বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে মোট ১০৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে খবর ইডি সূত্রে। তদন্তকারী সংস্থার তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পার্থ ও তাঁর সহযোগীর ৪৮.২২ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, অর্পিতার দুই ফ্ল্যাট থেকে মোট ৪৯.৮০ কোটি নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া সোনাদানার মূল্য ৫.০৮ কোটিরও বেশি। সব মিলিয়ে মোট ১০৩.১০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইডির তরফে আরও জানানো হয়েছে, বাজেয়াপ্ত হওয়া ৪৮.২২ কোটি টাকার মধ্যে ৪০-টি স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, যার মূল্য ৪০.৩৩ কোটি টাকা। পাশাপাশি ৩৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেরও সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যেখানে ৭.৮৯ কোটি টাকা রয়েছে।