দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ মার্চ: ব্রিটিশ ভারতে প্রায় শতাধিক জেলাশাসক অবিভক্ত মেদিনীপুর সহ অন্যান্য জেলা শাসন করেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই বাংলার মানুষের প্রতি নির্মম অত্যাচার করেছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে উত্তাল মেদিনীপুরে অত্যাচারী ৩ জন জেলাশাসককে হত্যা করেছিলেন মেদিনীপুরের বিপ্লবীরা। জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্রিটিশ প্রশাসকদের অনেকেরই সমাধি অনাদরে পড়ে রয়েছে। তাতে জন্মেছে আগাছা। বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহরের কামাড়পাড়া এলাকাতেও এক ব্রিটিশ জেলাশাসকের সমাধি রয়েছে। তিনি জন পিয়ার্স। অবিভক্ত মেদিনীপুরের প্রথম জজ-ম্যাজিস্ট্রেট-কালেক্টর। ভারতীয় পুরাতত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ (ASI/Archaeological Survey of India) এই সমাধিটিকে ‘জাতীয় স্মারক’ হিসেবে ঘোষণা করে একজন সরকারি কর্মচারী নিযুক্ত করেছেন। এই কর্মচারী নিয়মিত সমাধি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। একমাত্র এই ব্রিটিশ জেলাশাসকের প্রতিই ভারত সরকার কেন এতো শ্রদ্ধাশীল? সেই নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা করেছেন মেদিনীপুর শহরের তারাকালী বিদ্যাপীঠের শিক্ষক তথা বিশিষ্ট সমাজ গবেষক অতনু মিত্র। তিনিই সম্প্রতি বাংলাদেশের ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইতিহাস অ্যাকাডেমির আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রশংসা কুড়োলেন নিজের প্রবন্ধ বা গবেষণা পত্র উপস্থাপন করে।

thebengalpost.net
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে:

প্রসঙ্গত, ইতিহাস অ্যাকাডেমি ঢাকার আয়োজনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি (২০২৩) বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিত ‘ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ বিষয়ক ১৮তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই বিষয়ে অতনু মিত্র’র গবেষণা পত্র “জন পিয়ার্স: অ্যান আনফরগটন ব্যুরোক্রাট অফ কলোনিয়াল ইন্ডিয়া” গৃহীত হয় এবং উচ্চ-প্রসংশিত হয়। সেই সময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (বর্তমানে, দায়িত্বে আছেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী) তথা প্রাথমিকের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (DI/Primary Education) প্রাণতোষ মাইতি’র অনুমতি নিয়ে তিনি বাংলাদেশ যাত্রা করেন। মেদিনীপুর থেকে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে তিনি এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমন্ত্রিত হন। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেট ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ এডুকেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট, বাংলা একাডেমির বহু অধ্যাপক, গবেষক উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রায় ৩০০টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিভিন্ন দেশের গবেষকগণ। সেখানেই প্রশংসিত হয় মেদিনীপুরের অতনু মিত্র’র গবেষণা পত্র।