দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, শুভেন্দু ঘোষ, ২৫ ফেব্রুয়ারি: সমস্ত কূটনৈতিক চেষ্টাকে ব্যার্থ করে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল! রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরী সভা চলাকালীন খবর এলো, ইউক্রেন আক্রমণ করেছে ভ্লাদিমির পুতিন এর রাশিয়া। ইতিমধ্যে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার আক্রমণে ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত তিন শতাধিক। উদ্বিগ্ন ভারত সহ বিভিন্ন দেশ। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ৫০০ পড়ুয়া আটকে আছে ইউক্রেনে! যদিও, সতর্ক বিদেশমন্ত্রক। কিয়েভ থেকে ভারতীয় নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, বিদেশ সচিব হর্ষ ভি শ্রিংলা (Harsh V Shringla)। এদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং এর ছাত্র সুশোভন বেরা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের দুই ছাত্র যথাক্রমে অর্ণব মান্না এবং দেবজিৎ বর্মন আটকে আছে ইউক্রেনে। তিনজনই মেডিকেল পড়তে গিয়েছিল ইউক্রেনে। ইউক্রেনের কিয়েভ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সবংয়ের সুশোভন এবং পঞ্চম বর্ষের ছাত্র মহিষাদলের দেবজিৎ বর্মন। অন্যদিকে, কারকিভ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র নন্দকুমারের অর্ণব মান্না। তাঁরা সকলেই এখন অবধি সুরক্ষিত আছেন। আশ্রয় নিয়েছেন আন্ডারগ্রাউন্ডে। পরিবারের সঙ্গে একমাত্র যোগাযোগ হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কল। শুধু দুই মেদিনীপুর নয়, পশ্চিমবঙ্গের আরও একাধিক জেলার ছাত্র-ছাত্রীরা আটকে আছে ইউক্রেনে। ইতিমধ্যে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। তবে, উদ্বিগ্ন পরিবারগুলি।

thebengalpost.net
Russia President Vladimir Putin :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন):

thebengalpost.net
Advertisement (বিজ্ঞাপন) :

এদিকে, আমেরিকা জানিয়েছে এখনই তারা সেনা পাঠাচ্ছে না ইউক্রেনে! কোন দেশই সেভাবে সহযোগিতা না করায়, হতাশ ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যদিও বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, “রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন কখনোই তাঁর হাত থেকে ইউক্রেনের রক্ত পরিষ্কার করতে পারবেন না!” তবে, কূটনীতিকরা মনে করেন, আমেরিকা, রাশিয়া যদি পারস্পরিক চাপের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে উদ্ভুত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হতো তাহলে হয়তো বা আজকের এই অবস্থা দেখতে হতো না! এবার যা হবে, হাজার হাজার সাধারণ মানুষের প্রানের বিনিময়ে সাময়িক দখলদারি রাজনীতি কায়েম হলেও ভবিষ্যৎ সমস্যার ঘনঘটা আরো জটিল হয়ে উঠবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। তাই আসা করবো সব দেশনেতৃত্ব এক হয়ে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের ছেদ ঘটাবে, আঞ্চলিক শান্তি পুনঃস্থাপিত হবে। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আন্তর্জাতিক সীমান্ত দ্বন্দ্ব কোনো নুতন কিছু নয়। আমেরিকা -মেক্সিকো, ভারত-পাকিস্তান, চীন -তাইওয়ান থেকে শুরু করে রাশিয়া -ইউক্রেন প্রভৃতি সবই দেশভাগের কারনেই সৃষ্ট।
একইভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলোপেও যে রাশিয়া ও তার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সীমান্ত সমস্যার সমাধান এখনো অধরা তা বর্তমানে চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘর্ষ পরিস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব রাজনীতি, বানিজ্য ও অর্থনীতি এবং বাজার ব্যবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে। । যুযুধান দুই রাষ্ট্রপ্রধানসহ আমেরিকা, চীন, ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তাবড় নেতাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় অগ্রগতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

thebengalpost.net
Ukraine President Volodymyr Zolonskyy :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন):

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

এখন দেখা যাক কেন এই দ্বন্দ্ব? এর পিছনে বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্পর্কের টান পোড়েন কতটা প্রাসঙ্গিক? সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র হওয়ার আগে ইউক্রেন বহু শতাব্দী ধরে রাশিয়ান সাম্রাজ্যের একটি অংশ ছিল।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার সাথে সাথে ইউক্রেন স্বাধীনতা লাভ করে। তারপর থেকে, তার রাশিয়ান সাম্রাজ্যিক উত্তরাধিকারকে সরিয়ে দিয়ে পশ্চিমী দেশগুলোর সাথে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা রাশিয়া- ইউক্রেন সম্পর্কে শীতলতার অন্যতম কারণ। বিভাগের পরপরই ইউক্রেনের অধিবাসীদের মতো বিরোধ শুরু হয় এবং পশ্চিমাঞ্চল পশ্চিমের সাথে একত্রিত হতে চায় এবং পূর্বাঞ্চল রাশিয়ার সাথে। ক্রিমিয়া উপদ্বীপীয় অঞ্চলের রাশিয়ার সাথে সংযুক্তির পর, উভয় দেশের মধ্যে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে পারস্পরিক তিক্ততা কমানোর লক্ষে মিনস্ক যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইউক্রেনের পূর্বের রাশিয়ান ভাষাভাষীদের দ্বারা ক্রমশ বিচ্ছিন্নতাবাদ মাথাচাড়া দেয়। ২০১৪ সালে রাশিয়াপন্থী ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সহায়তা চুক্তি প্রত্যাখ্যান করায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন অসন্তুষ্ট হয়। ফলস্বরূপ পশ্চিম ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয় এবং পরবর্তীতে ‘মর্যাদার বিপ্লবে’ ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতাচ্যুত হন। সশস্ত্র সংঘাতের প্রাথমিক পর্বে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শিল্প কেন্দ্র ডনবাস অঞ্চলেকে ধংস করার লক্ষ্যে সংঘটিত যুদ্ধে প্রায় ১৪০০০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল। সেই সময় ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রাশিয়ার মদত বিষয়ে পশ্চিমী দেশগুলি উষ্ণা প্রকাশ করলেও মস্কো তা অস্বীকার করে বলেছেন, ইউক্রেনে বসবাসকারী রাশিয়ানরা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছে।

thebengalpost.net
ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাস:

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

ইউক্রেন – রাশিয়ার সাংস্কৃতিক বন্ধন কখনোই সংঘাতকে প্রস্রই দেয় না। রাশিয়ান রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন বারবার রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয়দের “একই মানুষ” হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং দাবি করেছেন যে ইউক্রেন অন্যায়ভাবে সোভিয়েত আমলে ঐতিহাসিক রাশিয়ান সাম্রাজ্যের ভূখন্ড পেয়েছে। ক্রেমলিন মনে করে বহুক্ষেত্রে পশ্চিমী দেশগুলোর প্রত্যক্ষ মদতে ইউক্রেন ২০১৫ সালের শান্তি চুক্তিকে লঙ্ঘন করে চলেছে। এই প্রসঙ্গে ইউক্রেনের মাটিতে ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত ন্যাটোবাহিনীর তৎপরতা যে রাশিয়া মোটেই ভালোচোখে দেখছে না, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও রাশিয়া মনে করে রাশিয়া- ইউক্রেন কুটনৈতিক চুক্তি অনুযায়ী ইউক্রেনে বিদ্রোহী অঞ্চলগুলিতে স্বায়ত্তশাসন প্রদান এবং বিদ্রোহীদের যে ক্ষমার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো তা যথাযথ কার্যকর করার কাজ অনেকক্ষেত্রে অবহেলিত। সাম্প্রতিক, দুই দেশের সম্পর্কে নুতনকরে যে শীতলতা দেখা দিয়েছে তাতে উভয় দেশের সাধারন বাসিন্দারা খুবই উদ্বিগ্ন। রাশিয়া প্রায় ১৭৫০০০ সৈন্য মোতায়েন করার পরিকল্পনা করেছে এবং তাদের প্রায় অর্ধেক ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য আক্রমণের প্রস্তুতির জন্য ইউক্রেনের সীমান্তের কাছাকাছি বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন করেছে। অন্যদিকে ইউক্রেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায় ন্যাটোবাহিনীও ইউক্রেনের মাটিতে তাদের সামরিক সম্ভার বাড়িয়েছে। উল্লেখ্য, রাশিয়া ইউক্রেনের ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে হওয়ায় উত্তেজনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বিডেন স্পষ্ট করে বলেছেন রাশিয়ার এই দাবি কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। ফলে হাজার হাজার রাশিয়ান সৈন্য ইউক্রেন আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী ইউক্রেনকে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত না করার শর্ত আমেরিকা সহ পশ্চিমী দেশগুলি মেনে না নিলে রাশিয়ার এই সামরিক তৎপরতা কমবে না বলেই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মত। (লেখক, ড. শুভেন্দু ঘোষ বিশিষ্ট গবেষক ও ভূগোলবিদ।)

thebengalpost.net
রাশিয়ার আক্রমণ:

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী প্রচার) :