দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ জুন: স্বয়ং কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে কলেজের এক অধ্যাপকের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর কলেজে! ছুটে আসতে হল পুলিশকে। জানা যায়, বুধবার কেশপুরের সুকুমার সেনগুপ্ত মহাবিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিতেই কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে বাংলা বিভাগের অধ্যাপকের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। কলেজ চলাকালীন-ই এই ধরনের ঘটনায় অস্বস্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, কেশপুর কলেজের অধ্যক্ষ ড. দীপক কুমার ভূঁইয়া’র সঙ্গে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুশান্ত দোলই মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। বুধবার যার চরম পরিণতি দেখা যায়! দু’জনই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। দুই অধ্যাপকের মধ্যে ঘটে যাওয়া এই ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনার মীমাংসা করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়েছে আনন্দপুর থানার পুলিশকেও। তবে, বিকেল থেকে কলেজের ভেতরে দুই পক্ষের বক্তব্য-ই খতিয়ে দেখেন পুলিশ আধিকারিকরা৷

thebengalpost.net
বাংলার অধ্যাপক ড. সুশান্ত দোলই :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেশপুর কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সুশান্ত দোলই ২০০৫ সালে কলেজে যোগদান করেছিলেন এবং ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (TIC) হিসেবে কাজ করেছেন। তারপর এই কলেজের স্থায়ী অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড: দীপক কুমার ভূঁইয়া। কলেজের বাংলার অধ্যাপক সুশান্ত বাবু বলেন, “আমি এই কলেজে একাধিক বিভাগের সমস্ত ভালো কাজকর্ম করেছিলাম। তার একটি করে শংসাপত্র হয়। ক্লাস নেওয়া, জুরি সদস্য হওয়া, ক্ষেত্র সমীক্ষা-তে অংশ নিয়েছিলাম। এই সমস্ত কাজের শংসাপত্রের জন্য গত বুধবার আমি অধ্যক্ষকে জানিয়েছিলাম লিখিতভাবে। অধ্যক্ষ আমাকে বলেছিলেন এত দ্রুত আমি করতে পারব না একটু সময় লাগবে। কাগজ পরীক্ষা করে আমি করব। প্রায় আট দিন পর আজকে সেই কাগজ আনতে গেলে অধ্যক্ষ অভব্য আচরণ করেন, সেই শংসাপত্র দিতে অস্বীকার করেন। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে ধস্তাধস্তি করে ঠেলে বের করে দেওয়া হয়। আসলে কলেজে উনি যোগ দেওয়ার পর একাধিক বেনিয়ম করেছেন। আমি তার প্রতিবাদ করাতেই এই কান্ড। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঊর্ধ্ব আধিকারিকদের জানানোর সাথে সাথে আনন্দপুর থানার পুলিশ কেও জানিয়েছি। পুলিশ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই জানতে পেরে যাবেন। এমন ঘটনা অনেকের সঙ্গেই হয়েছে। আমি চাই ওঁকে এই কলেজ থেকে সরানো হোক।” অন্যদিকে, কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ দীপক কুমার ভূঁইয়া বলেন, “আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। উনি কতগুলি কাগজ নিজে লিখে আমার কাছে হাজির করেন স্বাক্ষর করার জন্য। আমি বলি, সত্যাসত্য না জেনে স্বাক্ষর করতে পারবো না। আমি সে কথা বলতেই আমার টেবিলের কাছে চলে আসেন এবং অভব্য আচরণ করেন। তাই, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আসলে উনি চাইছেন আমি এখান থেকে সরে যাই। কারণ, এই কলেজ আগে পাঠশালা ছিল! আমি এসে তাকে পুনর্গঠন করে নিয়ম শৃঙ্খলা নিয়ে আসি। তাই আজ সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টা পুলিশকে আমি জানিয়েছি। তবে, সিসিটিভি সিস্টেম খারাপ থাকায় সেটা দেখাতে পারছিনা।”

thebengalpost.net
কলেজের অধ্যক্ষ ড. দীপক কুমার ভূঁইয়া :

thebengalpost.net
কলেজে পৌঁছতে হয় পুলিশকে: