দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ ডিসেম্বর: বাংলার ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ সৌরভ গাঙ্গুলীর প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানা শালবনী থেকে সরতে পারে গড়বেতার কোনো একটি ব্লকে! যদিও, জেলা প্রশাসন বা রাজ্য সরকারের তরফে এই বিষয়ে সরকারিভাবে বা অফিসিয়ালি কিছুই জানানো হয়নি। প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর (১৫ সেপ্টেম্বর) মাসে স্পেনের মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’- থেকে সৌরভ গাঙ্গুলী ঘোষণা করেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীতে জিন্দলদের ছেড়ে দেওয়া জমির একাংশে (প্রায় ৬০০ একর জমিতে) ইস্পাত কারখানা গড়ে তুলবেন। সেই বিষয়ে রাজ্য সরকারের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র মিলেছে বলেও স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ঘোষণা করেছিলেন সৌরভ। ফলে, ইস্পাত কারখানার পরিবর্তে জিন্দলরা সিমেন্ট কারখানা গড়ে তোলায় আশাহত শালবনীবাসী নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছিলেন। মাস তিনেকের মধ্যেই অবশ্য সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের খবর আসছে বিভিন্ন মহল থেকে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, জিন্দলদের জমি ফেরত নিয়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে, এই আশঙ্কায় সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে সৌরভকে নাকি পশ্চিম মেদনীপুরের আরো দু’টি বিকল্প জমির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

thebengalpost.net
জিন্দলদের কারখানা:

প্রথমটি হল- গড়বেতা-২ নং ব্লকের কৃষি খামার; যা একসময় এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি খামার হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল এবং দ্বিতীয়টি হল- গড়বেতা-৩ নং ব্লকের প্রয়াগ ফিল্ম সিটির অবশিষ্ট কয়েকশ একর জমি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমকে ১ টাকায় ৩৫০ একর জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায় এই জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজে দেওয়া হয়েছে। এই জমি কেবলমাত্র শিল্পের জন্যই ব্যবহার করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। ওই ৩৫০ একর জমিতেও সৌরভের ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠতে পারে বলে সূত্রের খবর। জানা যায়, লিজ দেওয়া এই জমি গোয়ালতোড়ের কৃষি খামারের (গড়বেতা-২ নং) অন্তর্গত জমি হতে পারে।

অন্যদিকে, বাম আমলে অধিগৃহীত (২০০৮ সালে) গড়বেতা-৩নং ব্লকের (চন্দ্রকোনা রোডের ডুকি সংলগ্ন এলাকায়) নয়াবসত এবং সাতবাঁকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬-টি মৌজায় প্রায় ৪৫০ একরে গড়ে ওঠে প্রয়াগ ফিল্মসিটি। ২০১২ সালে উদ্বোধন করেছিলেন শাহরুখ খান। জমির সিংহভাগই ছিল পাট্টা আর খাসজমি। তবে, খাতায়-কলমে ফিল্মসিটির জমি এখনও নাকি প্রয়াগের নামে নথিভুক্ত নয়! ইতিমধ্যে, বে-আইনি অর্থলগ্নি সংস্থা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন প্রয়াগের দুই কর্ণধার বাসুদেব বাগচী ও তাঁর ছেলে অভীক বাগচী। তার পর থেকেই প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা ফিল্মসিটি জুড়ে শুধুই অন্ধকার! এবার সেখানে সৌরভের ইস্পাত কারখানার মধ্য দিয়ে শিল্পের আলো প্রবেশ করে কিনা, তা দেখার জন্যই মুখিয়ে জেলাবাসী। যদিও, এই বিষয়ে জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর কাছে সৌরভ গাঙ্গুলীর প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানা সম্পর্কিত কোনরকম সরকারি বার্তা এখনো পর্যন্ত এসে পৌঁছায়নি!

thebengalpost.net
প্রয়াগ ফিল্ম সিটি: