দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ মার্চ: জঙ্গলমহলের পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে (MSME) বিনিয়োগ হতে চলেছে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। এতে সরাসরি কর্মসংস্থান হবে ১০ হাজার মানুষের। মঙ্গলবার জেলা শহর মেদিনীপুরের প্রদ্যোৎ স্মৃতি ভবনে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত “সিনার্জি অ্যান্ড বিজনেস ফ্যাসিলিটেশন কনক্লেভ ২০২৩” এ এমনই দৃপ্ত আশ্বাস শোনা গেল রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের মুখে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটির, মাঝারি ও বস্ত্র শিল্প দফতরের মন্ত্ৰী চন্দ্রনাথ সিনহা, দপ্তরের প্রধান সচিব রাজেশ পান্ডে সহ ক্যাবিনেট মন্ত্রী (জলসম্পদ উন্নয়ন ও পরিবেশ) ডাঃ মানস রঞ্জন ভুঁইয়া, প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, দুই জেলার জেলা শাসক, জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি, বিধায়ক ও কর্মাধ্যক্ষ বৃন্দ সহ শিল্প আধিকারিক ও শিল্পদ্যোগীরা।
দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানান, “জঙ্গলমহলের দুই জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে নতুন শিল্পোদ্যোগ ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এই সিনার্জি কনক্লেভের আয়োজন করা হয়েছে।” মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া জানান, “বামফ্রন্টের ৩৪ বছরে রাজ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ৬৫ হাজার শিল্প ও কল কারখানা। শ্রমিক নেতাদের জুলুম বাজি ও অত্যাচারের জন্য বাংলা ছেড়ে চলে গেছে বহু শিল্প। আর, ২০১১ সালের পর থেকে বদলে গেছে রাজ্যের শিল্প মানচিত্র। এখন শিল্প সম্ভবনাময় রাজ্য। রয়েছে দেউচা পাচামির মতো এশিয়ার সর্ববৃহৎ কয়লা ব্লক, গভীর সমুদ্র বন্দরের পাশাপাশি গড়ে উঠতে চলছে আরো অনেক ভারী শিল্প। এর পাশাপাশি গ্রামের প্রান্তিক মানুষের আর্থিক বিকাশের লক্ষ্যে জোর দেওয়া হয়েছে ক্ষুদ্র, ছোটো ও মাঝারি শিল্পে।” তিনি জানান, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জঙ্গলমহলের এই দুই জেলায় প্রায় ৯০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে ক্ষুদ্র, ছোটো ও মাঝারি শিল্পে। প্রায় ১০ হাজার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হবে বলেও তাঁর আশ্বাস। তিনি এও বলেন, “একদা মাও অধ্যুষিত ঝাড়গ্রাম, গোয়ালতোড়, শালবনি সহ খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্প তালুক ও মেদিনীপুরের খাস জঙ্গল শিল্প তালুকে গড়ে উঠেছে বহু ছোট ও মাঝারি শিল্প।”
মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া এও শোনান, “খড়্গপুর শিল্প তালুকে মুখ্যমন্ত্রী সাইকেল হাবের শিল্যান্যাস করে গেছেন। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গড়ে উঠেছে ১৩৪০ টি ইউনিট। বিনিয়োগ হয়েছে ৮৯ কোটি টাকা। ঝাড়গ্রাম জেলায় গড়ে উঠেছে ৩৭৬ টি ইউনিট। বিনিয়োগ হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা। দুই জেলায় কর্মসংস্থান হয়েছে ৭ হাজার মানুষের।” তিনি এদিন মঞ্চে থাকা আমলাদের জানান, “শুধুমাত্র অফিস করলেই হবে না। গ্রামে যান। মানুষের সমস্যা জানুন। সমাধানের চেষ্টা করুন। মাদুর, পাট, বাঁশ, বাবুই ঘাস নিয়ে কোথায় কোথায় ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তোলা যেতে পারে এজন্য মানুষকে সচেতন করুন। আপনারাই সরকারের মুখ।” ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানান, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যেভাবে এই রাজ্যে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়ন করেছেন এর নজির নেই। ব্যাঙ্ক ঋণ থেকে জমি, বিদ্যুৎ, জল সব ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে। দাসপুরে সোনা হাব, সবংয়ে মাদুর হাব, বিনপুরে ডোকরা হাব গড়ে উঠছে।”