দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৩১ ডিসেম্বর: বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং দেশের প্রাচীনতম প্রযুক্তিবিদ্যার প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur)। তবে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অন্যতম এই পিঠস্থানে বরাবরই আধ্যাত্মিক শক্তির জয়গান গাওয়া হয় বলে দাবি বিভিন্ন মহলে। প্রতিষ্ঠানের ৭০তম সমাবর্তনেও অবশ্য তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি! বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধনের উপর জোর দিলেন আইআইটি খড়্গপুরের অধিকর্তা (ডিরেক্টর) থেকে সমাবর্তনের সম্মানীয় অতিথিবৃন্দ। তাঁদের বক্তব্যে বারবার উঠে আসে শ্রীমদ্ভাগবত গীতা এবং স্বামী বিবেকানন্দের কথা। সেই সঙ্গে আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) জগদ্বিখ্যাত প্রাক্তনীরা পড়ুয়াদের কেবল আত্মিক উন্নতিই নয়, সমাজের ডাকে সাড়া দিয়ে সারা বিশ্বকে গর্বিত করার আহ্বানও জানান।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ নেতাজি অডিটোরিয়ামে আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) ৭০তম সমাবর্তন উৎসবের সূচনা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইআইটি খড়্গপুরের প্রাক্তনী তথা ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য প্রফেসর প্রদীপ কে. খোসলা এবং সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইআইটি খড়্গপুরের প্রাক্তনী তথা UGC-র প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান ড. ভূষণ পটবর্ধন। ৭০তম এই সমাবর্তনে আইআইটি খড়্গপুরের তরফে ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার ২০২৪’ দেওয়া হয় আইআইটি খড়্গপুরের প্রাক্তনী তথা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ও বিজ্ঞানী প্রফেসর বিশ্বনাথ চ্যাটার্জিকে। এছাড়াও, লাইফ ফেলো অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত ৭ জন প্রাক্তনীর হাতে। তাঁরা হলেন যথাক্রমে- রবিকান্ত, কমোডোর আর বি বর্মা, মিস নিবেদিতা আর ভিডে, সুবীর চৌধুরী, গজেন্দ্র সিং, অমিত খাড়ে এবং অমিতাভ কান্ত। ১৩ জনের হাতে তুলে দেওয়া হয় ডিস্টিংগুইসড অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ড। এদিন, ৪৪৮ জনের হাতে পিএইচডি-র শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। বি.টেক, মি.টেক, এম.এস, এমবিএ সহ সবমিলিয়ে ৩৪৫৬ জন পড়ুয়ার হাতে তুলে দেওয়া হয় শংসাপত্র বা ডিগ্রী।
৭০তম সমাবর্তনে মূলত অতীত থেকে বর্তমানের হাত ধরে আইআইটি খড়্গপুরের সাফল্যের ইতিহাস তুলে ধরা হয়। আইআইটি খড়্গপুরের পরমশক্তি সুপার কম্পিউটার থেকে বর্তমান সময়ে AI, সেমি-কন্ডাক্টর শিল্পে আইআইটি খড়্গপুরের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা তুলে ধরেন আইআইটি খড়্গপুরের ডিরেক্টর বীরেন্দ্র কুমার তেওয়ারি। তিনি বলেন, “আইআইটি খড়্গপুর বিভিন্ন ক্ষেত্রেই একের পর এক নজির সৃষ্টি করে চলেছে। প্রযুক্তি, নিরাপত্তা, পরিসংখ্যান, সামাজিক উন্নয়ন থেকে মহাকাশ গবেষণা সব ক্ষেত্রেই নিরন্তর গবেষণা করে চলেছে। ISRO, DRDO, IOC-র সঙ্গে কাজ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও মেলবন্ধন গড়ে তুলে গবেষণা করছেন আইআইটি খড়্গপুরের গবেষক ও বিজ্ঞানীরা।” তিনি মনে করিয়ে দেন, “করোনাকালে বা অতিমারীর সময়ে ১৩ মাসে আমরা ৪০ হাজার মানুষকে রেশন তুলে দিয়েছি, প্রাক্তনীদের সাহায্যে। গত দু’বছরে দুটি নতুন বিভাগ খোলা হয়েছে- এআই এবং এডুকেশন। তবে, ব্যর্থতার কথাও বলতে হয়, চেষ্টা করেও আমরা মালয়েশিয়াতে ক্যাম্পাস চালু করতে পারিনি। মেডিক্যাল কলেজও চালু করতে পারলাম না! যা খুব প্রয়োজন ছিল।” উল্লেখ্য যে, প্রফেসর বীরেন্দ্র কুমার তেওয়ারির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর। স্বাভাবিকভাবেই নিজের আবেগঘন বক্তৃতায় তিনি তাঁর কার্যকালের সাফল্য-ব্যর্থতার ইতিহাস তুলে ধরেন। অন্যদিকে, সমাজের স্বার্থেই বিজ্ঞান চর্চার সাথে সাথে আধ্যাত্মিক শক্তিতে বিকশিত হওয়া তথা অন্তরের শক্তিতে জাগরিত হওয়ার বার্তা দেন ৭০তম সমাবর্তনের ‘গেস্ট অফ অনার’ তথা ইউজিসি’র প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান ড. ভূষণ পটবর্ধন। তাঁর সাম্প্রতিক বই ‘জেনোম টু ওম’ (‘Genome to Om’)-র প্রসঙ্গ টেনে তিনি অন্তরের শক্তি তথা ‘ওম’ ধ্বনির মাহাত্ম্যের কথা তুলে ধরেন। পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে তিনি ‘মডার্ন সায়ন্স টু মেটা সায়েন্স’-র পথ ধরে বিজ্ঞান চর্চার আহ্বান জানান। ব্যর্থতা থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন সমাবর্তনের প্রধান অতিথি তথা আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য প্রফেসর প্রদীপ কে. খোসলা। তিনি বলেন, “ব্যর্থতা আর সাফল্যকে পৃথক করে দেখলে হবে না! ব্যর্থতাও আসলে সাফল্যেরই একটি পর্যায় মাত্র। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও শক্তিশালী হতে হবে।” সেই সঙ্গে স্নাতক (বি.টেক) স্তর থেকেই পড়ুয়াদের সমাজ, পরিবেশ ও অর্থনীতির ওপর ভাবনাচিন্তা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “আজ তোমরা যে জায়গায় বসে আছ, সেটা তোমাদের সৌভাগ্য। এজন্য তোমাদের পরিশ্রম ও নিষ্ঠার সাথে সাথেই বাবা-মা ও প্রিয়জনদের অবদানও কম নয়। চেষ্টা কর তাঁদের সকলের জন্য তথা সমাজের জন্য, এই পৃথিবীর জন্য কিছু করার।” মুম্বাইয়ের সন্তান তথা আইআইটি খড়্গপুরের ‘প্রাক্তনী’, বর্তমানে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য প্রফেসর প্রদীপ কে. খোসলা বলেন, “১৯৮২ সালে, ২৫ বছর বয়সে আমি আমেরিকা যাওয়ার সুযোগ পাই। আর সেটাই ছিল আমার প্রথমবার আকাশে ওড়া (প্ল্যানে চাপা)! বিশ্ব তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে যাও!”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২ জানুয়ারি:'রেল শহর' মানেই বিতর্ক। উত্তেজনা। তা সে রাজনৈতিক জগত…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ জানুয়ারি: বৃহস্পতিবার সাত সকালেই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১ জানুয়ারি: বুধবার ভর সন্ধ্যায় ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা ৬০নং…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৩১ ডিসেম্বর: ডিরেক্টর বা অধিকর্তা (Director) হিসেবে আজই (৩১ ডিসেম্বর)…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ ডিসেম্বর: মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সাত সকালেই হাতির হামলায়…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ ডিসেম্বর: 'ফিলোডস টিউমার' (Phyllodes tumor) হল বিরল টিউমার…