দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৩ ডিসেম্বর: মানব শরীরে বাসা বাঁধে নানান জটিল রোগ। কখনও প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়ে, আবার কখনও রোগ না ধরা পড়ায় মৃত্যু হয় অনেকের। তবে, এবার অভাবনীয় প্রযুক্তি আবিষ্কার করল আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur)। আবিষ্কৃত যন্ত্রে ফুঁ দিলেই জানা যাবে রোগ। প্রয়োজন নেই ল্যাব বা প্যাথলজি সেন্টারে গিয়ে নানাবিধ টেস্টের! মানবদেহ থেকে নির্গত নিঃশ্বাসেই জানা যাবে রোগ। কারণ, বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক মহলের একাংশের মতে, মানব-নিঃশ্বাসে লুকিয়ে থাকে নানা রোগের লক্ষণ। এবার সেই প্রযুক্তি আবিষ্কার করে ফেলেছে আইআইটি খড়্গপুরের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সেই যন্ত্র বাজারজাত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা!

thebengalpost.net
IIT Kharagpur:

আইআইটি’র বিজ্ঞানীদের মতে, ক্যান্সার, ডায়বেটিস, কিডনি ও লিভারের সমস্যার মতো গুরুতর রোগ সম্পর্কেও এবার খুব দ্রুত নিশ্চিত হওয়া যাবে। আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাইক্রো ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবে চলছে গবেষণা। খড়্গপুর আইআইটির ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক তরুণকান্তি ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে গবেষক অভীক শেঠ ও লিসা সরকারের গবেষণায় নয়া প্রযুক্তি আসতে চলেছে বাজারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, মানুষের শরীরের রোগ নির্ণয় করা অনেকটাই সহজ হবে। জটিল পরীক্ষার পরিবর্তে, খুব সহজে সেন্সর ও মানুষের শ্বাসকে কাজে লাগিয়ে এক-দেড়মিনিটে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হবে। ফুঁ দিলেই জানা যাবে, রোগের নাম। মানুষের নিঃশ্বাস থেকেই রোগের লক্ষণ জানা যাবে। তাই, নিঃশ্বাসকেই কাজে লাগিয়ে ক্যান্সার, ডায়বেটিস, কিডনি ও লিভার-সহ যাবতীয় রোগ নির্ণয় এখন রোগীদের হাতের মুঠোয়।

প্রসঙ্গত, নিঃশ্বাসের সঙ্গে ডায়বেটিস বা লিভারের সমস্যায় ভোগা রোগীর অ্যাসিটোন, অ্যামোনিয়া নির্গত হয়। আবার ক্যান্সার রোগীর নিঃশ্বাস থেকে অ্যারোমেটিক কম্পাউন্ডগুলি পাওয়া যায়। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, টেডলার ব্যাগ এবং তাদের তৈরি ফিল্ড এফেক্ট নামক সেন্সরকে কাজে লাগিয়ে কোন রোগীর দেহে কী রোগ বাসা বেঁধেছে তা দ্রুত জানা যাবে। টেডলার ব্যাগে ফুঁ দিয়ে শ্বাস ভরতে হবে রোগীকে। তারপর, যন্ত্রের সাহায্যে রোগীর দেহ থেকে কী গ্যাস নির্গত হচ্ছে, তা সহজে যাচাই করা যাবে। যা রোগ নির্ণয়ে সুবিধা হবে। ফলে দ্রুত চিকিৎসা সম্ভব। এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে দ্রুত ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিও নির্ণয় করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আইআইটি’র বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পরবর্তী পদক্ষেপ হল একটি পোর্টেবল ডিভাইস তৈরি করা। তার কাজও চলছে বলে জানাচ্ছেন গবেষকদ্বয়। তাঁদের বক্তব্য, সাধ্যের মধ্যেই একটি ডিভাইস বানানো হবে। যা সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়াও যাবে। বাজারে আসতে খুব বেশি দেরি নেই। আরও উন্নত হবে চিকিৎসা পরিষেবা।