দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ ডিসেম্বর: প্রযুক্তিবিদ্যার অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খড়্গপুর আইআইটি (IIT Kharagpur)’র ক্যালেন্ডারে (Calendar) ঠাঁই পেল প্রাচীন ভারতবর্ষের ‘পুরান কথা’। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে আইআইটি খড়্গপুরের ২০২২ সালের বার্ষিক ক্যালেন্ডার। IIT খড়গপুরের Centre of Excellence for Indian Knowledge System এই ক্যালেন্ডার তৈরি করেছে। ক্যালেন্ডারের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে, ‘রিকভারি অফ দ্য ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম’ (Recovery of the Foundation of Indian Knowledge System)। এই ক্যালেন্ডারের ১২ টি পাতায় জায়গা পেয়েছে ভারতের পবিত্র স্থান, সিন্ধু সভ্যতা, চক্রাকার সময়, স্থান-সময়-কারণ, অরৈখিক প্রবাহ পরিবর্তন, আর্য ঋষিগণ, মহাজাগতিক আলো ও সময়ের যুগ, শব্দার্থবিদ্যা ও প্রেক্ষাপট এবং আর্য যুগ সম্পর্কে ভ্রান্তি ও বিশ্বযুদ্ধের মতো বিষয়। ছবিতে উঠে এসেছেন, ঋষি অরবিন্দ থেকে স্বামী বিবেকানন্দ। মোট তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে এবারের ক্যালেন্ডারটি। এর মধ্যে রয়েছে বৈদিক সংস্কৃতি, সিন্ধু সভ্যতা এবং ঔপনিবেশিক শাসকদের প্রচারিত আজগুবি তথ্যের ব্যাখা। এই ক্যালেন্ডারে IIT-র তরফে ভারতে ‘আর্যদের আক্রমণ’ এর তথ্যটি নস্যাৎ করা হয়েছে।
IIT খড়গপুরের Centre of Excellence for Indian Knowlwdge Systems ও Nehru Museum of Science and Technology-র চেয়ারপার্সন অধ্যাপক জয় সেন এই ক্যালেন্ডারটি তৈরি করেছেন। এই দুই বিভাগের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এই ক্যালেন্ডার। তবে, প্রযুক্তিবিদ্যার এই প্রতিষ্ঠানে ‘পুরান কথা’ আলোচিত হওয়ায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে! সম্প্রতি, খড়্গপুর আইআইটির সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেছে ‘সারা ভারত শিক্ষা বাঁচাও কমিটি’র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখা। তাদের দাবি, এর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের উদ্দেশ্যমূলক হিন্দুত্ববাদী কল্পনাপ্রসূত বিষয়ের যোগ রয়েছে! সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক তরুণ নস্কর বলেন, “ক্যালেন্ডারে যে ভাবে ‘ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেমে’র নাম করে নানা পৌরাণিক ও অনৈতিহাসিক বিষয়কে বিজ্ঞান ও ইতিহাসের নামে তুলে ধরা হচ্ছে, তা এদেশে বিজ্ঞান-শিক্ষার একটি কলঙ্কময় অধ্যায় হবে”। তবে, খড়্গপুর আইআইটির ‘সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ফর ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেমে’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক জয় সেন এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “ক্যালেন্ডারে কোনও বিতর্কিত বিষয় নেই। বরং আর্য আক্রমণের মিথ নিয়ে যে ভুল ও ভ্রান্তি ভারতের ইতিহাসের রূপরেখাকে বিভ্রান্ত ও কলুষিত করেছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়েছে। ক্যালেন্ডারের ১২টি পাতায় বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টান্ত দিয়ে ১২টি প্রমাণও দেওয়া হয়েছে।”