মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ মার্চ: দেশজুড়ে বৃষ্টিপাতের তারতম্য কিভাবে হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই তারতম্য কোথায়, কিভাবে হবে- এই সংক্রান্ত সঠিক গবেষণা তুলে ধরে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় ‘ইয়ং সায়েন্টিস্ট’ (Young Scientist) এর পুরস্কার জিতলেন আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur)- এর তরুণ গবেষক শুভার্থী সরকার। শুভার্থী মেদিনীপুর শহরের পুলিশ লাইনের বাসিন্দা। বয়স মাত্র ২৫। এই বয়সেই আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফে তরুণ আবহাওয়া বিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। স্বাভাবিকভাবেই খুশি আপামর মেদিনীপুরবাসী। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) কলকাতার আলিপুরে অবস্থিত ভারত সরকারের আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্রে অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যান্য আধিকারিক ও বিজ্ঞানীদের উপস্থিতিতে শুভার্থী’র হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

thebengalpost.net
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তুলে দেওয়া হল পুরস্কার:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফে দেশের তরুণ বিজ্ঞানী তথা গবেষকদের (বয়স বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ৪০ এর মধ্যে) জন্য একটি সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রথমে রিসার্চ পেপার বা গবেষণা পত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তারপর ওই রিসার্চ পেপারের উপর প্রেজেন্টেশন বা উপস্থাপন করতে হয়েছিল। এর ভিত্তিতেই গত ২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস বা ওয়ার্ল্ড মেটিয়োরোলজিক্যাল ডে (World Meteorological Day) উপলক্ষে বেছে নেওয়া হয় দেশের সেরা তিনজন তরুণ বিজ্ঞানীকে। প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন পুনের আবহাওয়া বিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান আইআইটি (এম)-তে পাঠরতা এক তরুণী। তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন পুনেরই আইএমডি নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের এক তরুণ গবেষক। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন আইআইটি খড়্গপুরের গবেষক শুভার্থী।

আজ অর্থাৎ শনিবারই মেদিনীপুর শহরে নিজের বাড়িতে ফিরেছেন শুভার্থী। জানালেন বিশ্ব উষ্ণায়ন কিভাবে বৃষ্টিপাতের তারতম্যের উপর প্রভাব ফেলছে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে। এই তারতম্য ভবিষ্যতে আরো বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে পরিবেশের! এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এই তরুণ বিজ্ঞানী। ভবিষ্যতে দেশজুড়ে কোথায়, কিভাবে বৃষ্টিপাতের তারতম্য হবে এই সংক্রান্ত ধারণাই তিনি নিজের গবেষণা পত্রে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন বলে জানান শুভার্থী। পুরুলিয়া (দশম অবধি) ও নরেন্দ্রপুর (একাদশ-দ্বাদশ) রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনী শুভার্থী সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে বি.টেক করেছেন শিবপুর থেকে। তারপর এম.টেক (M. Tech) করেছেন আইআইটি খড়্গপুর থেকে। এই মুহূর্তে সেখানেই পি.এইচ.ডি (PhD) বা গবেষণা করছেন। শুভার্থী জানান, “সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এরই অন্তর্গত ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং অংশে বায়ুমণ্ডল ও পৃষ্ঠতল সম্পর্কে বিশদে গবেষণা করতে হয়েছে। সেই সূত্রেই বৃষ্টিপাতের তারতম্য সম্পর্কিত একটি রিসার্চ পেপার জমা দিয়েছিলাম এবং বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলাম। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের বিজ্ঞানীরা সেটিকে বেছে (দ্বিতীয় হিসেবে) নেওয়ায় আমি গর্বিত।”

thebengalpost.net
বাবা-মা’র সঙ্গে শুভার্থী: