thebengalpost.net
বন্ধ হয়ে গেল পরিষেবা:

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৯ আগস্ট: আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) নবনির্মিত মেডিক্যাল কলেজের ‘আউটডোর’ পরিষেবা সম্প্রতি চালু হয়েছিল। তবে, স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের একটি অংশের চাপে সেই পরিষেবাও সোমবার থেকে বন্ধ হয়ে গেল। বলা ভালো, পরিষেবা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলেন আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, হাসপাতালের ঠিকা কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের একটি অংশের তরফে। তাঁদের দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের কাজে ঢোকাতে হবে। এ নিয়ে অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসেরই দু’টি গোষ্ঠী দ্বিধাবিভক্ত! অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে একটি অংশ আন্দোলন করছেন বা আইআইটি কর্তৃপক্ষকে চাপ দিচ্ছেন। অন্য একটি অংশ এই বিষয়ে অবশ্য নীরব! তবে, এর ফল ভুগতে হল স্থানীয় বাসিন্দাদের। মঙ্গলবার আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতাল (বা, বি.সি রায় ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি) এর ‘আউটডোর’ (বহির্বিভাগ) পরিষেবা বন্ধ রাখা হচ্ছে।

thebengalpost.net
বন্ধ হয়ে গেল পরিষেবা:

খড়্গপুর গ্রামীণের বলরামপুরে অবস্থিত আইআইটি’র নবনির্মিত এই মেডিক্যাল কলেজ বা মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় তৃণমূল নেতা মিলন বক্সী, রূপচাঁদ মুর্মু, শারাফত আলি সহ গ্রামবাসীদের একটি অংশের তরফে কর্তৃপক্ষের প্রতি চাপ দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের লোককে কাজে যোগদান করাতে হবে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যে বি.সি রায় মেডিক্যাল কলেজ তথা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়োগ পাওয়া কিছু জনকে বাদ দেওয়ার দাবিও করা হয়েছে অভিযোগ। কর্তৃপক্ষের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এখনই এই ধরনের অনৈতিক দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে যে সমস্ত ঠিকা কর্মীরা কাজ পেয়েছেন, তাঁরাই কাজ করবেন। পরবর্তী সময়ে নতুন করে লোক নেওয়া হবে আলোচনার মাধ্যমে। কিন্তু, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এবং গ্রামবাসীদের একটি অংশ অনড় থেকে ঠিকা কর্মীদের হাসপাতালে প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছিলেন কয়েক দিন ধরেই। ফলে, সাফাই কাজ সহ নানা পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছিল! এই বিষয়ে আইআইটি খড়্গপুরের রেজিস্ট্রার অমিত জৈন মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “স্থানীয়রা দিনের পর দিন আমাদের ওই হাসপাতালে কর্মরত টিকা কর্মীদের ঢুকতে বাধা দিচ্ছিলেন। এমনকি তাঁদের গায়ে হাতও তোলা হয়েছে। এই হাসপাতাল তো জাতীয় সম্পত্তি। সেটা পরিচ্ছন্ন করার জন্য সাফাই কর্মীরা আসতে না পারায়, বন্ধ করা ছাড়া উপায় ছিলো না!”

আইআইটি (IIT Kharagpur) কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশ-প্রশাসনকে এই বিষয়ে জানিয়েও কাজ না হওয়ায়, শেষ পর্যন্ত বি.সি রায় মেডিক্যাল কলেজ তথা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের বহির্বিভাগ (Outdoor) পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয় অনির্দিষ্টকালের জন্য। তৃণমূলের এক পক্ষের এই বিষয়ে অভিযোগ, এই হাসপাতালের নিয়োগ সংক্রান্ত যৌথ কমিটিতে থাকা এক তৃণমূল কাউন্সিলরের (৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষের) আত্মীয় সহ কয়েকজনকে কাজে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, স্থানীয় অনেককে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ নিয়ে, তৃণমূলেরই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে বলেও অভিযোগ। ফলে, ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া হয় একটি পক্ষের তরফে। ওই পক্ষে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের অপর এক কাউন্সিলর (২৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চন্দন সিংহ) সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, আইআইটি কর্তৃপক্ষ স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাজে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েও, তা পূরণ করেননি! আর, এই সমস্ত অশান্তির কারণেই আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে জেলা পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে আউটডোর পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে দাবি। যদিও, এই বিষয়ে জেলা পুলিশের তরফে কোন বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে, জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা-কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি জানান, “এই বিষয়ে আমরা কিছু জানতাম না। কারণ, আমরা (জেলা নেতৃত্ব) পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে ব্যস্ত আছি কয়েকদিন ধরে। তবে, বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি এবং দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে আউটডোর পরিষেবা চালু করার আবেদন জানাব কর্তৃপক্ষের কাছে। বুধবার থেকেই যাতে পরিষেবা চালু হয়, সেই বিষয়ে উদ্যোগ নিচ্ছি।”

thebengalpost.net
বি.সি রায় ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি :