দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা ও খড়্গপুর, ২৫ এপ্রিল: বাবা-মা’র আশঙ্কা বা অভিযোগেই সিলমোহর দিল উচ্চ আদালত! আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) মেধাবী পড়ুয়া ফাইজান আহমেদ (Faizan Ahmed)- এর মৃত্যু যে ‘অসুস্থতা’ বা ‘আত্মহত্যা’-র কারণে হয়নি; বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তেমনটাই অনুমান কলকাতা হাইকোর্টেরও। মাথায় পাওয়া গেছে আঘাতের চিহ্ন! মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফাইজানের বাবা-মা সহ পরিবার-পরিজনেরা প্রথম দিন থেকেই অভিযোগ করে আসছিলেন, “তাঁদের ছেলেকে খুন করা হয়েছে!” উঠে এসেছিল র্যাগিং বা নির্মম শারীরিক নির্যাতনের তত্ত্ব। এবার, সেই অভিযোগেই প্রাথমিকভাবে সিলমোহর দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের মহামান্য বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, মৃত ফাইজানের দেহ কবর বা সমাধি (Grave) থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্ত করতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা’র একক বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী, ওই ঘটনার তদন্তকারী অফিসার (পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের অধীন খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ আধিকারিক) পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য ফাইজ়ানের দেহ অসম থেকে কলকাতায় নিয়ে আসবেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে হবে পুনরায় ময়নাতদন্ত। এর আগে, গত ১৫ অক্টোবর (২০২২) মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের যে চিকিৎসক ময়নাতদন্ত করেছিলেন তাঁকেও উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। তিনি আরও নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফার এই ময়নাতদন্ত শেষ করতে হবে। আগামী ৩০ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিনও ধার্য করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর (২০২২) আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur) এর লালা লাজপত রায় হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল বছর ২৩’র মেধাবী পড়ুয়া তথা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফাইজানের পচাগলা মৃতদেহ। তিনি অসমের (বা, আসামের) গুয়াহাটির তিনশুকিয়ার বাসিন্দা ছিলেন। এরপর, অসম থেকে তাঁর বাবা-মা সহ পরিবারের সদস্যরা ১৫ অক্টোবর পৌঁছেছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ফাইজানের বাবা সেলিম আহমেদ মৃতদেহ দেখেই আঁতকে উঠেছিলেন! তাঁর অভিযোগ ছিল, “আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে! অন্তত ৫-৬ দিন আগেই মেরে ফেলা হয়েছে আমার ছেলেকে। দেহ ফুলে গেছে। আমার ছেলের মুখের আদল সম্পূর্ণ বদলে গেছে!” তাঁর মা রেহানা আহমেদ করজোড়ে প্রার্থনা জানিয়েছিলেন, “আমার ছেলের মৃত্যুর সঠিক বিচার চাই! দয়া করে কোনো বাবা-মা ছেলেমেয়েদের আইআইটি-তে পড়তে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকবেন না।” পরদিন (১৬ অক্টোবর, ২০২২) তাঁরা দেহ নিয়ে গিয়ে সমাধিস্থ করেন ফাইজান-কে। ঘটনায় টুইট করে শোক প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ববর্মা।
এরপর, খড়্গপুর টাউন থানা তথা জেলা পুলিশের তরফে সঠিক তদন্ত হচ্ছেনা অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা প্রথম থেকেই জেলা পুলিশ এবং আইআইটি কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ছিলেন। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের শুনানিতে তাঁদের (পুলিশ ও আইআইটি কর্তৃপক্ষকে) তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। এরপরই, ফেব্রুয়ারি মাসের (২০২৩) ২০ তারিখ নাগাদ আইআইটি খড়্গপুরের ৫ পড়ুয়া, ১ অধ্যাপক ও ১ প্রাক্তন ওয়ার্ডেন (হোস্টেল কর্মী) এর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে ফের তদন্ত শুরু করে খড়্গপুর টাউন থানা। কিন্তু, তাতেও সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি। গড়ে দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি। সেই কমিটির রিপোর্টেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই ছাত্রের মাথার পিছনে ভারী কোনও জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। তার চিহ্নও পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি দাবি করেছে, পুলিশের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আঘাত লাগার বিষয়টি ছিল না। এরপরই, মৃতদেহ কবর বা সমাধি থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা। আগামী ১ মাসের মধ্যে দেহ অসম থেকে কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে এসে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ফলে, ঘটনার বা সমাধিস্থ (বা, কবরস্থ) করার প্রায় ৭ মাস পর দেহ তোলা হবে ফাইজানের! কলকাতা মেডিক্যালে পুনরায় হবে ময়নাতদন্ত। বিচারপতির নজিরবিহীন নির্দেশে শেষ পর্যন্ত সঠিক বিচার পাবেন ফাইজানের পরিবার! এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ জানুয়ারি: বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১২ জানুয়ারি: আড়াইটার সময় ছিল ফ্লাইট। কলকাতায় একটি মিটিং শেষ…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ জানুয়ারি: প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১০ জানুয়ারি: আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) রসায়ন বিভাগের জুনিয়র টেকনিশিয়ানের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ জানুয়ারি: ফের চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ মেদিনীপুর…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ জানুয়ারি: "ওরা নেবে এক, আর আমাকে দেবে এক! সেজন্যই আমি…