দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৩ মার্চ: একটা ছোট্ট চিপের (Silicon Microchip) মধ্যেই দুনিয়া! বর্তমান যুগকে তাই সিলিকন যুগ বা সেমিকন্ডাক্টর (Semi-Conductor) যুগও বলা হয়। প্রতি মুহূর্তে নানা আবিষ্কার’কে সেমিকন্ডাক্টর (বা, অর্ধপরিবাহী)-র মাধ্যমে চিপ-বন্দী করে এগিয়ে চলেছে চীন-জাপানের মতো দেশগুলি। পিছিয়ে থাকতে রাজি নয় ভারত-ও! বিকশিত ভারত (Vikait Bharat) এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়া ভিশনের (India’s Techade Vision) মধ্য দিয়ে ভারত সেই লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। নাম দেওয়া হয়েছে আইএসএম বা ভারতের সেমি-কন্ডাক্টর মিশন (India’s Semi-Conductor Mission)। ভারতে ৩-টি সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্প বা শিল্পের শিলান্যাসও করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোট ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকায় গুজরাতের ধোলেরা ও সানন্দ এবং অসমের মরিগাঁও জেলায় তৈরি হচ্ছে এই ৩-টি সেমিকন্ডাক্টর কারখানা। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ বা আত্মনির্ভর ভারতের বিজয় ঘোষণা করে ২০২৬ সালের মধ্যে ভারতেই সেমিকন্ডাক্টর চিপ উৎপাদিত হবে বলে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী। এদিকে, এই সেমিকন্ডাক্টর মিশনকে সামনে রেখে চীন-জাপানকে পাল্লা দিতে এগিয়ে এসেছে ভারতের আইআইটি খড়্গপুরও (IIT Kharagpur)। বুধবার আইআইটি খড়্গপুরের নেতাজি অডিটোরিয়ামে এই সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়। ১০০ দিনে অন্তত ১০০টি পেটেন্ট বা আবিষ্কার-স্বত্ব (বা, আবিষ্কারের অধিকার-স্বত্ব/Patent)-কে অনুমোদন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তথা আহ্বান জানিয়ে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

thebengalpost.net
IIT Kharagpur-র নেতাজি অডিটোরিয়ামে সেমিকন্ডাক্টার সংক্রান্ত আলোচনা সভা:

উল্লেখ্য যে, আইআইটি খড়গপুরের স্পনসরড রিসার্চ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল কনসালটেন্সি সেলের একটি বিশেষ ড্রাইভে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে প্রায় আড়াই গুণ (2.5 গুণ) বেশি পেটেন্ট (আবিষ্কারের অধিকার-স্বত্ব) ফাইলিং হয়েছে বা পেশ করা হয়েছে। একইভাবে, অনুমোদন দেওয়া পেটেন্টের সংখ্যাও চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালে রেকর্ড সংখ্যক ১০৬টি পেটেন্ট পেশ করা হয় এবং ৭১টি পেটেন্টের অনুমোদন দেওয়া হয়। অ্যারোস্পেস, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, রাসায়নিক, বৈদ্যুতিক, সিভিল, কম্পিউটার সায়েন্স, এআই এবং IoT, Cryogenics, রোবোটিক্স, রাবার প্রযুক্তি, 6G এবং তার বাইরে টেলিযোগাযোগ, শক্তি বিজ্ঞান, শিল্প এবং সিস্টেম, ধাতুবিদ্যা ও উপকরণ, খনিজ, ন্যানোসায়েন্স, প্রযুক্তি, চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত এই পেটেন্টগুলি ভারতবর্ষের উন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বলেই দাবি কর্তৃপক্ষের। এবার, ১০০ দিনে অন্তত ১০০টি পেটেন্ট বা আবিষ্কার-স্বত্ব (বা, আবিষ্কারের অধিকার-স্বত্ব)-কে অনুমোদন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, অতি সম্প্রতি আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) তরফে ফোর্থ জেনারেশনের পাবলিক বাইসাইকেল শেয়ারিং সিস্টেম বা পাবস (PUBBS) আবিষ্কার করা হয়েছে। আইআইটি খড়্গপুরের আর্কিটেকচার অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের আরবান ইনফরমেটিক্স ল্যাবে বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন বিশেষ এক স্মার্ট লক। যা ব্যবহার করা যাবে বাইসাইকেল কিংবা ই-বাইসাইকেলে। যেখানে থাকছে অটোমেটিক ও ম্যানুয়াল লকিং সিস্টেমের পাশাপাশি একাধিক সুবিধা। বাইসাইকেলে অন্যান্য তালার মতোই থাকবে এই বিশেষ লক। যেখানে থাকবে একটি কিউ.আর। এই বিশেষ লক এবং তার ভেতরের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার তৈরি করেছেন আইআইটি খড়্গপুরের গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এবং সম্পূর্ণ অ্যাপ নির্ভর এই বিশেষ স্মার্ট সিস্টেম। অধ্যাপক দেবব্রতিম পন্ডিতের তত্ত্বাবধানে বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন এই বিশেষ শেয়ারিং সিস্টেম। এছাড়াও, এআই (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্য দিয়ে ওয়েল্ডিং-র ত্রুটি যাচাই করার জন্য আইআইটি খড়্গপুর আবিষ্কার (IIT Kharagpur) করেছে বিশেষ সফটওয়্যার। নাম দেওয়া হয়েছে আই-ওয়েল্ড। বর্তমানে যা গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড ব্যবহার করছে।

thebengalpost.net
Advertisement (বিজ্ঞাপন):