দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ জুন: “রাজ্যে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৬ হাজার শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে, ২০২১ এর ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার শিশু আক্রান্ত হলেও, গত চার মাসে (৩১ শে মে পর্যন্ত) ২১ হাজারেরও বেশি শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছে। স্বভাবতই, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল’কে শিশুদের জন্য পিকু (PICU) ও নিকু (NICU) প্রস্তুত রাখার কথা বলা হয়েছে।” মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে এসে একথা জানিয়েছেন রাজ্যের উচ্চ পদস্থ স্বাস্থ্যকর্তা তথা কোভিড ওএসডি ডাঃ গোপালকৃষ্ণ ঢালি। তিনি এও জানিয়েছেন, “তৃতীয় ঢেউ আসবে কিনা আমরা কেউ নিশ্চিত নই, তবে কমবয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ধীরে ধীরে বাড়ছে। সেক্ষেত্রে, শিশুরাও সংক্রমিত হতে পারেন। তাই, প্রতিটি জেলা তথা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে, শিশুদের চিকিৎসা শিশু বিশেষজ্ঞদেরই করতে হবে। তাই, আমরা মূলত মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগগুলোকেই আরও উন্নত করার পরামর্শ দিয়েছি।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার লেভেল ফোর করোনা হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে হাসপাতালের বর্তমান পরিকাঠামো নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করার সাথে সাথে, বিভিন্ন বিষয়ে তিনি পরামর্শ দিয়ে যান, কিভাবে আরও উন্নত পরিষেবা দেওয়া যাবে এই বিষয়ে। এরপরই, মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন, তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রতিটি জেলাকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেইমতো জেলাগুলি কাজ করছে।

thebengalpost.in
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে জোর কদমে চলছে কাজ :

এদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে শিশুদের জন্য মোট ২৫ টি কোভিড আইসিসিইউ বা পিকু (PICU- Pediatric Intensive Care Unit) প্রস্তুত করার কাজ জোরকদমে চলছে বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু। এছাড়াও, জেলার খড়্গপুর মড়কুমা হাসপাতাল, ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, শালবনি সুপার স্পেশালিটি ও করোনা হাসপাতাল এবং ডেবরা সুপার স্পেশালিটি ও করোনা হাসপাতালে যথাক্রমে ১০ টি করে শয্যা প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। তবে, এই ৬৫ টি ছাড়াও, নবজাতকদের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালে আরও ৫ টি ও ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে আরও ৫ টি কোভিড নিকু (NICU- Neonatal Intensive Care Unit) তৈরি করা হচ্ছে। শিশু ও নবজাতকদের জন্য এই জেলায় মোট ৭৫ টি কোভিড আইসিসিইউ প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল। অন্যদিকে, ঝাড়গ্রাম জেলাতেও ৩০ টি কোভিড পিকু শয্যা বা আইসিসিইউ প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল, নয়াগ্রাম সুপার স্পেশালিটি ও গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটিতে ১০ টি করে পিকু গড়ে তোলা হচ্ছে।‌ অন্যদিকে, ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে আরও ৫ টি নিকু (Neonatal Intensive Care Unit) শয্যাও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য যে, উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের প্রতিটি জেলাতেই তৎপরতা দেখানো হচ্ছে শিশুদের জন্য কোভিড আইসিসিইউ প্রস্তুত রাখার জন্য। রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানিয়েছেন, “দ্বিতীয় ঢেউ নিম্নমুখী, কিন্তু তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছেনা! তাই স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।”

thebengalpost.in
ডাঃ গোপালকৃষ্ণ ঢালি :