মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ জানুয়ারি: পিছিয়ে পড়া এলাকার প্রসূতি’রা অপুষ্টিতে ভোগেন। অন্তঃসত্ত্বা বা গর্ভবতী (Pregnant) অবস্থায় প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম সহ ওষুধপত্র-ও ঠিকঠাক জোটেনা! স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়ে গর্ভের সন্তানের উপর। নানা শারীরিক জটিলতা তৈরি হয়। এমনকি প্রসবের সময় বা তারপরে প্রসূতি মা সহ তাঁর শিশুর ক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকিও এসে যায়। আর, এই সব থেকে প্রসূতিদের রক্ষা করতে বা শিশু ও প্রসূতি মৃত্যুর হার আরো কমাতে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের এক অনন্য উদ্যোগ ‘মাদার্স হাট’ (Mother’s Hut)। বুধবার সকালে জেলার প্রথম মাদার্স হাটের উদ্বোধন হল শালবনী গ্রামীণ হাসপাতালে (Salboni Rural Hospital)। উদ্বোধন করলেন জেলাশাসক আয়েশা রানী এ। ছিলেন বিধায়ক তথা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নেপাল সিংহ, শালবনীর BDO ও BMOH যথাক্রমে প্রণয় দাস ও স্বর্ণালী দে প্রমুখ।

thebengalpost.net
মাদার্স হাটের উদ্বোধন:

বুধবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ জঙ্গল অধ্যুষিত শালবনী ব্লকের শালবনী গ্রামীণ হাসপাতাল (Salboni Rural Hospital)-এর এই মাদার্স হাটের উদ্বোধন হয়। এ প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (CMOH) ডাঃ সারেঙ্গী জানিয়েছেন, “আজ (১৮ জানুয়ারি) জেলার প্রথম মাদার্স হাটের উদ্বোধন হল শালবনীতে। জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক সুন্দর ভাবনাকে বাস্তব রূপ দেওয়া হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে। এরপর, ধাপে ধাপে ডেবরা, বেলদা ও ঘাটালেও ‘মাদার্স হাট’ করা হবে। প্রত্যন্ত এলাকার তথা তুলনামূলক ভাবে পিছিয়ে পড়া ও দরিদ্র পরিবারের প্রসূতি মহিলাদের সন্তান জন্ম দেওয়ার (প্রসবের) অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে এই মাদার্স হাটে রাখা হবে এবং প্রয়োজনীয় যত্ন নেওয়া হবে। এককথায় তাঁদের মাতৃত্ব যাতে সুরক্ষিত থাকে, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” তাঁর সংযোজন, “প্রাথমিকভাবে শালবনীতে ৩০টি শয্যা থাকবে। পরে প্রয়োজন অনুযায়ী তা ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে। যেহেতু শালবনীতে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল আছে, আছে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা; সেজন্যই এখানে প্রসূতি মায়েরা তাঁদের প্রসবের আগে অন্তত ১৫ দিন প্রয়োজনীয় বা উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন। এছাড়াও, তাঁদের পুষ্টিকর খাবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম সহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও দেওয়া হবে। তারপর শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই চিকিৎসকেরা প্রসবের ব্যবস্থা করবেন। সেক্ষেত্রে কোনো জটিলতা থাকলে ওই প্রসূতি’কে প্রয়োজনে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও পাঠানোর‌ ব্যবস্থা করা হবে। তবে, নেহাতই যদি প্রয়োজন হয়, তবেই। কারণ, শালবনী সহ যে সকল হাসপাতাল গুলিকে আমরা বেছে নিয়েছি, সেখানে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আছে বলেই বেছে নেওয়া হয়েছে।”

thebengalpost.net
শালবনীতে উদ্বোধিত হল জেলার প্রথম মাদার্স হাট :