দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ সেপ্টেম্বর: চিকিৎসকের অভাবে প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল স্বাস্থ্য পরিষেবা! রোগী ভর্তি বন্ধ হয়েছিল আগে থেকেই। এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর দু’নম্বর ব্লকের চাঙ্গুয়াল ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, গোকুলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং পপরআড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের আমলে রোগী ভর্তি পরিষেবা (বেড সহ) সহ শুরু হয়েছিল। অপরদিকে, চাঙ্গুয়াল বি পি এইচ সি’র আধুনিকীকরণ সম্পন্ন হয়েছে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে। ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি ত্রিশ সয্যা বিশিষ্ট দ্বিতল গ্রামীণ হাসপাতালের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। কিন্তু, সেই হাসপাতাল চিকিৎসকের অভাবে ধুঁকছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রোগী ভর্তি পরিষেবা। আউটডোর টুকু চলছিল নামমাত্র। এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তাঁদের বক্তব্য, “রাতেভিতে কোন অসুবিধে হলেও ১০-১৫ টি গ্রামের বাসিন্দাদের ভরসা প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল অথবা প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।” কিন্তু, কিছুদিন আগে অবধি এখানে রোগী ভর্তি পরিষেবা সহ চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। হঠাৎ করে হাসপাতালে চিকিৎসক-শূণ্য হয়ে গেছে! এই পরিস্থিতিতে, এলাকাবাসীর অভিযোগে নড়েচড়ে বসল জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। বেঙ্গল পোস্ট সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই কথা জানতে পেরেই পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ভুবন চন্দ্র হাঁসদা।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী’র নতুনভাবে উদ্বোধনের পর, চাঙ্গুয়াল ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামো যথেষ্ট ভালো ছিল। দ্বিতল হাসপাতালে ৩০ টি শয্যা ছিল। ছিল চিকিৎসকদের জন্য কোয়ার্টারের ব্যবস্থা। কিন্তু, চিকিৎসকেরা না থাকায় চিকিৎসকদের কোয়ার্টার গুলিও জীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অন্যদিকে, চিকিৎসকের অভাবে ৩০ টি বেডে ধুলো জমছিল! গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, পুনরায় বেড সহ পরিষেবা শুরু করতে হবে। কারণ, এই হাসপাতালের উপর অন্তত ১০-১৫ টি গ্রামের বাসিন্দারা নির্ভরশীল! এই খবর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (CMOH) ডাঃ ভুবন চন্দ্র হাঁসদা’র কানে পৌঁছতেই তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। শুক্রবার সকালে তিনি জানিয়েছেন, “চাঙ্গুয়ালে দু’জন চিকিৎসক ছিলেন। তাঁদের ডিটেলমেন্টে অন্য হাসপাতলে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, BMOH সহ আরও দু’জন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছিলেন। মাত্র ২-৩ দিনের জন্য একটু সমস্যা হয়েছিল। একজন চিকিৎসক ছুটি নিয়েছিলেন আত্মীয় বিয়োগের কারণে। অন্যজন এখান থেকে চলে গিয়েছিলেন আগেই। তাই আমরা ডিটেলমেন্টে থাকা ২ জন চিকিৎসককে পুনরায় ফিরিয়ে এনেছি চাঙ্গুয়ালে। কেশিয়াড়ি ব্লক থেকে ডাঃ অমিতাভ পন্ডা ইতিমধ্যে জয়েন করেছেন। অরপজনও আগামী সপ্তাহে জয়েন করবেন।” তবে, তিনি পররআড়া ও গোকুলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অব্যবস্থা মানতে চাননি। CMOH বললেন, “আমি খোঁজ নিয়েছি ওখানে ঠিকঠাক ভাবেই চিকিৎসা পরিষেবা চলছে।” যদিও এলাকাবাসী বলছেন, “আউটডোর চললেও, রোগী ভর্তি নেওয়া হয় না।” বিষয়টি নিয়ে পুনরায় খোঁজ নিয়ে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।