দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ মার্চ:নিঃসন্দেহে জীবনের সবথেকে গর্বের দিন! চিকিৎসক ছেলেকে বরণ করে নিলেন নার্স মা। পৃথিবীর প্রত্যেক বাবা-মা’ই চান, তাঁদের সন্তান যেন কৃতিত্বে, শ্রেষ্ঠত্বে, প্রতিভা আর প্রতিষ্ঠায় তাঁদেরকেও অতিক্রম করে যায়। মাঝি ঈশ্বরী পাটনীও চেয়েছিলেন, তাঁর জীবন কষ্টে অতিবাহিত হলেও, তাঁর সন্তান যেন থাকে ‘দুধে-ভাতে’! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঐতিহাসিক দাঁতনের দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতালের নার্স সর্বাণী গিরি-ও মনে প্রাণে চেয়েছিলেন, তাঁদের সন্তান যেন শিক্ষা, দীক্ষা আর প্রতিষ্ঠায় তাঁদেরকেও ছাপিয়ে যায়। সর্বাণী দেবীর স্বপ্ন পূরণ করেছেন তাঁর ছেলে অতীশ। মা যে হাসপাতালের (দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতালের) নার্স, ছেলে অতীশ সেই হাসপাতালের-ই চিকিৎসক (Medical Officer) হিসেবে যোগদান করলেন মঙ্গলবার। আর, ছেলেকে ওই হাসপাতালে বরণ করে নিলেন মা!
প্রসঙ্গত, দাঁতনের ছেলে অতীশ গিরি শৈশব থেকেই মেধাবী। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পাস করে এন.আর.এস মেডিক্যাল কলেজ (Nilratan Sircar Medical College) থেকে এমবিবিএস (MBBS) পাসও করেছেন। তারপরই চিকিৎসক হিসেবে তাঁর প্রথম পোস্টিং হয়, নিজের জন্মস্থান দাঁতনের গ্রামীণ হাসপাতালে। ঘটনাচক্রে সেই দাঁতন হাসপাতালের নার্স (PHN) হলেন, তাঁর মা সর্বানী গিরি। মঙ্গলবার হাসপাতালে জয়েন (যোগদান) করলেন অতীশ। আর, এই দিনটার জন্যই যেন মনেপ্রাণে অপেক্ষা করেছিলেন ‘জননী’ সর্বাণী! আজ তাঁর স্বপ্নপূরণের দিন। তাই, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (BMOH) ডাঃ অভিষেক কুন্ডু নিজে নয়, অতীশ-কে বরণ করে নেওয়ার জন্য এগিয়ে দিলেন সর্বাণী দেবী’কেই। আর, চোখে আনন্দাশ্রু নিয়ে ছেলেকে হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে বরণ করে নিলেন ‘গর্বিত’ মা সর্বাণী দেবী! খুশি আর আবেগের অশ্রু তখন শুধু ওই দু’চোখেই নয়, তা ছড়িয়ে পড়েছে উপস্থিত সকলের চোখেই। অতীশ বললেন, “বাবা-মা’র স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। এবার, দাঁতনবাসীর আশা-আকাঙ্খা পূরণ করার পালা।” একধাপ এগিয়ে, বিএমওএইচ অভিষেক কুন্ডু কিংবা পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ মিলন কর বললেন, “দাঁতনবাসীর ঘরের ছেলে দাঁতন হাসপাতালের চিকিৎসক হয়ে এসেছেন। সমগ্র দাঁতনের এক গর্বের দিন। অর্ধেক রোগজ্বালা তো এতেই সেরে গেছে!”