দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ ফেব্রুয়ারি: ভুয়ো বা জাল (Fake) ST সার্টিফিকেট ব্যবহার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে (Midnapore Medical College) ভর্তি! কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল (WBMCC)-র করা তদন্তে তা প্রমাণিত হয়েছে। আর তারপরই, মেদিনীপুর মেডিক্যালের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী তথা হবু চিকিৎসকের ভর্তি বাতিল (Admission Cancelled) করে, তাকে কলেজ থেকে বহিষ্কার (Removed) করলেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। করা হয়েছে ১ লক্ষ টাকা জরিমানাও। বৃহস্পতিবার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা (Principal) ডঃ মৌসুমী নন্দী। ইতিমধ্যে, বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তারা ওই ছাত্রীকে গ্রেফতার করে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছেন।

thebengalpost.net
সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ আদিবাসী সংগঠনের:

প্রসঙ্গত, ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র (Caste Certificate) দেখিয়ে মেডিক্যালে (MBBS) ভর্তি-দুর্নীতি কাণ্ড ঘিরে দুই বিচারপতির ‘নজিরবিহীন সংঘাত’ ঘিরে ইতিমধ্যে উত্তাল হয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট। এমনকি, শুধুমাত্র এই কাণ্ডের জেরেই কলকাতা হাইকোর্টের এই দুই বিচারপতির বেঞ্চ (বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ) থেকেই সরেছে শিক্ষা-বিষয়ক সমস্ত মামলা। তবে, এই মামলাতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বিশেষ সাংবিধানিক বেঞ্চে অবশ্য রাজ্য স্বীকার করেছে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র তথা ST সার্টিফিকেট দেখিয়ে ভর্তির ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতির (বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের) নির্দেশে (ইতিশা সোরেন মামলায়) ইতিমধ্যে তারা ১৪-টি ‘ভুয়ো সার্টিফিকেট’ এবং ‘ভর্তি’ (Admission) বাতিল করেছে। ১০টি FIR দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল। বলাই বাহুল্য, ওই ১৪ জন ভুয়ো ST প্রার্থীর মধ্যেই একজন মেদিনীপুর মেডিক্যালের ছাত্রীটি। তার সার্টিফিকেট ‘জাল’ বা ভুয়ো (Fake) প্রমাণিত হওয়ার পরই তার ভর্তি বাতিল করে, কলেজ থেকে তাকে ‘বহিষ্কার’ করা হয়েছে।

ওই ছাত্রীর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। ছাত্রীটি চলতি শিক্ষাবর্ষেই (2023-’24) মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিল বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ ডঃ নন্দী। এরপর, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মেডিক্যাল এডুকেশন এবং মেডিক্যাল কাউন্সিল তদন্ত শুরু করে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ওই ছাত্রী সহ ১৪ জনের সার্টিফিকেট ভুয়ো বা ফেক বলে প্রমাণিত হয়। তারপরই ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ডঃ নন্দী। তবে, শুধু বহিষ্কার নয় ওই ছাত্রীর গ্রেফতারির দাবি তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতি সহ বিভিন্ন সংগঠন। সংগঠনের তরফে শিবুলাল মুর্মু বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে সমাজ মাধ্যমে সরব হয়েছেন। বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাসের দাবি, “অনেকই হয়তো SSKM-এ কুকুরের ডায়ালিসিস বিষয়টি ভুলে গেছেন! এদের আমলে সব সম্ভব। এই বিষয়টিতেও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস যুক্ত। অনেক টাকার খেল হয়েছে! তাই সঠিক তদন্ত হোক।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি পাল্টা কটাক্ষ করে বলেছেন, “এই ঘটনায় রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলই সঠিক তদন্ত করেছে এবং সেই অনুযায়ী মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, তাই এই বিষয়ে বিজেপির মতো উল্টোপাল্টা মন্তব্য আমরা করবনা।”