দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ২০ সেপ্টেম্বর: “প্রাথমিকভাবে আন্দোলনের জয় হলেও, ন্যায়বিচার মেলেনি এখনও!” আর তাই স্বাস্থ্য ভবনের সামনে চলা ‘অবস্থান’ এবং কর্মবিরতি ‘আংশিক’ প্রত্যাহার করে জরুরি পরিষেবায় যোগদান করতে চলেছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকেরা। সেই সঙ্গে বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ পাঠানো এবং ‘অভয়া ক্লিনিকে’র মাধ্যমে পরিষেবা দেওয়ার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেছেন তাঁরা। অভয়ার বা তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে চলা আন্দোলনের ৪১তম দিনে ঠিক এমনটাই ঘোষণা করা হয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের মঞ্চ থেকে (ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট/WBJDF)।
বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা জানিয়েছেন, “আজ আমরা আন্দোলনের একচল্লিশ নম্বর দিনে এসে বলতে পারি, অভয়ার ন্যায় বিচারের জন্য যে পাঁচদফা দাবি নিয়ে আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল তাতে প্রাথমিক ভাবে আমরা জয়ী হয়েছি। আমাদের আন্দোলনের চাপে আমরা বন্ধ করতে পেরেছি ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জঘন্য চক্রান্ত, তদন্ত ভেস্তে দেওয়ার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। আমরা রাস্তায় যেমন লড়াই করেছি তেমন হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্টেও লড়ছি। কিন্তু, আমাদের এই লড়াই শেষ হয়নি। যতদিন না অভয়ার ন্যায়বিচার হচ্ছে, যতদিন না আসল দোষীরা এবং তাদেরকে যারা আড়াল করতে চেয়েছে তারা সকলে শনাক্ত হচ্ছে এবং শাস্তি পাচ্ছে ততদিন এই লড়াই চলবে।” আর সেই কারণেই, শুক্রবার তাঁরা স্বাস্থ্য ভবনের সামনে গত ন’দিন ধরে চলা অবস্থান প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে শনিবার থেকেই প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের জরুরি পরিষেবাগুলিতে তাঁরা যোগদান করবেন বলেও জানিয়েছেন।
WBJDF-র বক্তব্য, “শুক্রবার আমরা প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে ফিরে যাব এবং সমস্ত এসেনশিয়াল সার্ভিসেস নিয়ে আলোচনা করে শনিবার থেকে essential services-এ (জরুরি পরিষেবাতে) যোগদান করব। বাকি বিষয়গুলিতে আমোদের কর্মবিরতি চলবে। দায়বদ্ধতার জন্য আমরা কাজে ফিরলেও এই অন্তর্বর্তীকালীন অবস্থায় নিরাপত্তার দায়িত্ব রাজ্য প্রশাসনের এবং তার কোনও অন্যথা হলে আমাদের আবার কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু, স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান বা আংশিক কর্মবিরতি তোলার অর্থ এই নয় যে, অভয়ার ন্যায় বিচারের দাবিতে WBJDF-র আন্দোলন শেষ হয়ে যাচ্ছে।
আমাদের ১ নং দাবি অর্থাৎ স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থার প্রশ্নে এখনো আমরা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখছি না! অভয়ার যন্ত্রণার অংশীদার হয়ে আমরা এই লড়াই করেছি। আমাদের বোনের বা দিদির খুনিদের শাস্তি আমাদের প্রথম এবং মূল দাবি। সেই কারণে শুক্রবার বেলা ৩ টের সময় স্বাস্থ্য ভবন থেকে অবস্থান তুলে নিয়ে আমরা সিবিআই এর অফিস CGO Complex অবধি একটি মহামিছিলের ডাক দিচ্ছি। এই আন্দোলন এবং ন্যায়বিচারের স্পিরিটকে মাথায় রেখে ছাত্র-ছাত্রীসহ সমস্ত স্তরের মানুষকে আগামীকালের CGO অভিযানে সামিল হতে আহবান করছি। এর সাথে আমরা জানাচ্ছি মেডিকেল কলেজ গুলিতে অভয়ার ন্যায় বিচারের দাবিতে যে ধর্না মঞ্চ চলছিল সেগুলি এরপরও চলতে থাকবে। অবস্থান বা আংশিক কর্মবিরতি তুললেও রাজ্য সরকারকে আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই যে ৫ নং দাবিকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত পদক্ষেপ আমাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে তার বাস্তব অগ্রগতি না ঘটলে, আমরা আবার আন্দোলনকে তীব্রতর করব। সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি আগামী ২৭ তারিখ। আমরা চাই ২৭ তারিখের আগেই সরকার পক্ষ এই বিষয় গুলিতে পদক্ষেপ নিন। নইলে ২৮ তারিখ থেকেই আমরা আবার আমাদের আন্দোলন তীব্রতর করতে বাধ্য হব।”