মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ আগস্ট: জেলাশাসক এবং রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হিসেবে বুধবার (২৪ আগস্ট)-ই প্রথম মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন আয়েশা রানী এ। ঘুরে দেখলেন প্রতিটি ওয়ার্ড। কথা বললেন রোগীদের সঙ্গে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সহ একাধিক বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু, সুপার ডাঃ ইন্দ্রনীল সেন সহ আধিকারিকদের। এরপরই, প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে বৈঠক করলেন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে। অধ্যক্ষ, সুপার এবং অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) পীনাকী রঞ্জন প্রধান ছাড়াও ছিলেন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী, জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র, আইএমএ’র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার সম্পাদক তথা মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের প্রধান ডাঃ তারাপদ ঘোষ সহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধান (HOD)’রাও। এই বৈঠকেই পরিকাঠামো ও পরিষেবা সংক্রান্ত একাধিক বিষয় উঠে আসে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কাছে ক্যাথল্যাব বা হৃদরোগ সংক্রান্ত বিভাগ (Cath Lab) কবে চালু হবে, তা জানতে চান জেলাশাসক। কলেজের প্রিন্সিপাল বা অধ্যক্ষ ডাঃ কুন্ডু জানান, পরিকাঠামোগত কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গেছে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে মেসিনপত্র এসে গেলে, নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকেই চালু করা সম্ভব। দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টি সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন জেলাশাসক।

thebengalpost.net
মেডিক্যাল কলেজে জেলাশাসক আয়েশা রানী:

এদিন বৈঠক শেষে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ক্যাথল্যাব ছাড়াও একাধিক বিষয়ে তুলে ধরেন। তিনি জানান, “আশা করছি ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই ক্যাথল্যাব চালু করা সম্ভব। অ্যানজিওগ্রাম (Angiogram) ছাড়াও, স্টেন্ট বসানো বা অ্যানজিওপ্লাস্টি (Angioplasty), পেসমেকার (Pacemaker) বসানো’র কাজ ধীরে ধীরে শুরু করা হবে।” এছাড়াও তিনি জানান, “এই মুহূর্তে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যে ক্যান্সার বিভাগ আছে, সেখানে কেমোথেরাপি (Chemotherapy) করা হয়। এবার, আমরা রেডিওথেরাপি (Radiotherapy) চালু করতে চাইছি। এই বিষয়ে জেলাশাসক-কে জানিয়েছি। উনি স্বাস্থ্য ভবনে প্রস্তাব পাঠাবেন বলেছেন। আমরাও লিখিত আকারে প্রস্তাব দেব।” এই মুহূর্তে মেডিক্যালের এই বিভাগে ৪ জন চিকিৎসক আছেন বলে ডাঃ কুন্ডু জানিয়েছেন। তিনি এও জানিয়েছেন, “পিজি (এম.ডি বা এম.এস)-তে এখন আমাদের কলেজে ৯-টি বিষয় পড়ানো হয়। অর্থোপেডিক্স, চেস্ট মেডিসিন সহ আরও ৬-টি বিষয় আমরা শুরু করতে চাইছি। আশা করছি, স্বাস্থ্য ভবন থেকে পরিদর্শন হলে, আমরা অনুমতি পাব।”

এছাড়াও, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে একটি আই ব্যাঙ্ক (Eye Bank) তৈরির কাজ চলছে গত প্রায় ১ বছরের বেশি সময় ধরে। সেটিও নতুন বছরের শুরুতে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষে জানিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন, “নিউরোলজি (স্নায়ু বিভাগ), গাইনোকোলজি (স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগ) এবং পেডিয়াট্রিক্স বিভাগে এই মুহূর্তে অনেক উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে। সেই বিষয়ে জেলাশাসক ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে অবগত করা হয়েছে। একইসঙ্গে, এই বিভাগগুলোর পরিকাঠামো আরও উন্নত করার বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে।” আগামীদিনে এই সমস্ত বিভাগের জটিল চিকিৎসা সম্বন্ধীয় খবরগুলি (ব্রেন স্ট্রোক সনাক্ত ও চিকিৎসা, বন্ধ্যাত্ব রোধে আধুনিক চিকিৎসা, শিশুদের অত্যাধুনিক চিকিৎসা প্রভৃতি) প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

thebengalpost.net
পরিকাঠামো খতিয়ে দেখলেন আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে: