দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ ডিসেম্বর: আর কলকাতায় নমুনা পাঠানোর প্রয়োজন নেই। এবার থেকে ‘প্রতিরোধী যক্ষ্মা’ বা ‘এমডিআর টিবি’ (MDR TB/ Multidrug-resistant TB) নির্ণয় হবে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেই। শুক্রবার মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে উদ্বোধন হল অত্যাধুনিক ‘সি অ্যান্ড ডিএসটি ল্যাবরেটরি’ (C & DST Lab./ Culture and Drug Susceptibility Testing Laboratory)’র। উদ্বোধন করলেন জেলাশাসক আয়েশা রানী এ। ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষা ডাঃ মৌসুমী নন্দী, সুপার ডাঃ ইন্দ্রনীল সেন, শিশু বিভাগের প্রধান ডাঃ তারাপদ ঘোষ এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ পার্থসারথি পাল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, কলকাতা, উত্তরবঙ্গ, বাঁকুড়া ও বর্ধমানের পর রাজ্যে এটি পঞ্চম ‘সি অ্যান্ড ডিএসটি ল্যাবরেটরি’। জেলাশাসক জানিয়েছেন, এর ফলে উপকৃত হবেন প্রায় ৭ হাজার যক্ষ্মা রোগী। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের মতে, “টিবি বা যক্ষ্মা রোগীদের মাল্টি ড্রাগ রেজিস্টেন্ট আছে কিনা, তা জানার জন্য প্রতিটা রোগীর ড্রাগ রেজিস্টেন্ট টেস্ট অত্যাবশ্যক। আগে এই ধরনের টেস্টের জন্য রোগীকে বা তার কফ স্যাম্পল কলকাতায় পাঠাতে হতো। এখন থেকে জেলাতেই এই পরিষেবা পাবেন রোগীরা।” উল্লেখ্য যে, সাধারণ যক্ষ্মা ৬-৯ মাসের চিকিৎসায় সেরে ওঠে। কিন্তু, প্রতিরোধী যক্ষ্মা (MDR TB) সারতে সময় লাগে অন্তত ২৪-২৭ মাস। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা যায়, নতুন যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে ২-৩ শতাংশ এমডিআর টিবি (প্রতিরোধী যক্ষ্মা)-তে আক্রান্ত হন এবং দ্বিতীয়বার যাঁরা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন তাঁদের মধ্যে ১৫ শতাংশের দেহে এমডিআর টিবি’র জীবাণু পাওয়া যায়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী সতর্ক করে দেন, মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস (Mycobacterium Tuberculosis) সাধারণত ফুসফুসে আক্রমণ করে। রোগের জীবাণু ছড়ায় বাতাসের মাধ্যমে। প্রতি বছর গড় মৃত্যুর হার ৫ শতাংশ। যক্ষা রোগীর শরীরে রোগ প্রতিরোধ না থাকায়, তাঁদের মধ্যে অনেকেই গত ২ বছরে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। উপসর্গও কাছাকাছি একই রকম। তাই দীর্ঘদিন ধরে জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট থাকলে দ্রুত হাসপাতালে আসা বা নমুনা পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন আছে বলে তিনি জানিয়েছেন।