মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ সেপ্টেম্বর: করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ‘শূণ্য’ হয়েছে গত ৭ দিন আগেই। তাই, শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের (Salboni Super Speciality Hospital) সুবিশাল ও উন্নত পরিকাঠামো-কে এবার সাধারণ চিকিৎসা পরিষেবার কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে গত শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত জেলা টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে। এ নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ভুবন চন্দ্র হাঁসদা সোমবার জানিয়েছেন, “আপাতত জেলার করোনা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রতিদিন ১৬-১৮-২০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকেই আবার স্বল্প উপসর্গযুক্ত হওয়ায় বাড়িতেই থাকছেন। করোনা হাসপাতালগুলিতে ১-২ জন করে রোগী আছে। এই পরিস্থিতিতে, শালবনী করোনা হাসপাতালের এত সুন্দর পরিকাঠামো-টিকে অহেতুক ফেলে না রেখে, আপাতত সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হিসেবে সাধারণ চিকিৎসায় ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই কাজ চলছে। দিন কয়েকের মধ্যেই জেলাশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে রোগী ভর্তি শুরু হয়ে যাবে।”
প্রসঙ্গত, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে লেভেল ফোর করোনা হাসপাতাল হিসেবে পরিষেবা দিয়েছে শালবনী সুপার স্পেশালিটি। ইতিমধ্যে, তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য নিকু-পিকু (NICU & PICU) তৈরির কাজও সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। আছে- ICCU, HDU প্রভৃতি পরিষেবা। আছেন প্রায় ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। কিন্তু, এই মুহূর্তে রোগী না থাকায় সেই পরিষেবা ব্যবহার করা যাচ্ছে না! যদিও, নতুন সুপার তথা বিএমওএইচ ডাঃ মনোজিৎ বিশ্বাস গ্রামীণ হাসপাতালের পরিষেবায় চিকিৎসকদের কাজে লাগাচ্ছেন। নিজেও দিনরাত পরিষেবা দিচ্ছেন। তবে, সুপার স্পেশালিটি’র সার্বিক পরিকাঠামো সাধারণের পরিষেবায় নিয়োজিত করলে এই এলাকার হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ডাঃ বিশ্বাস জানিয়েছেন, “এখানকার চিকিৎসক ও চিকিৎসা পরিকাঠামো এবার সাধারণ রোগীদের পরিষেবায় নিয়োজিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে মাননীয়া জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমলের কাছে। গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে ১-২ জন করে রোগী ভর্তি থাকছিলেন। তাই, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও আমাদের হাসপাতালের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।” তবে, ভবিষ্যতে তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাবের উপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ভুবন চন্দ্র হাঁসদা। জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র জানিয়েছেন, “জেলার করোনা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে, তৃতীয় ঢেউয়ের জন্যও জেলা প্রস্তুত আছে। ৮০০ টি বেড রেডি রাখা হয়েছে। রোগী না থাকায় আপাতত শালবনী সুপার স্পেশালিটি-কে এখন সাধারণ হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হবে। করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়লে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল, ঘাটাল, খড়্গপুর, ডেবরা-তে করোনা রোগী ভর্তি হতে পারবে। যদিও, সেখানেও এখন ১-২ জন করে করোনা সংক্রমিত রোগী আছেন।”