দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর, ২৩ সেপ্টেম্বর: ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠলো! অভিযোগ উঠলো ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। মৃত ব্যক্তির নাম- ধনপতি মাহাত। বয়স মাত্র ৪৫। তিনি আবার তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তা সত্ত্বেও এই হাল! স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত সাধারণ ঝাড়গ্রামবাসী। ইতিমধ্যেই ঝাড়গ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন, মৃতের স্ত্রী আল্পনা মাহাত।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, গত ১২ সেপ্টেম্বর গাড়ি থেকে পড়ে পা ভেঙে যায় ঝাড়গ্রাম থানার অন্তর্গত বারডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা ধনপতি মাহাত’র। পরের দিন পায়ের চিকিৎসার জন্য ধনপতি মাহাত-কে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল বা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবার। দীর্ঘ সাতদিন পা ভাঙা অবস্থায় কোনো রকম চিকিৎসা ছাড়াই ধনপতি মাহাত-কে ফেলে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ! এমনটাই অভিযোগ পারিবারের। হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত অস্থি চিকিৎসক ডাক্তার মৃণাল কান্তি সাহাকে বাড়ির লোকেরা এই বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন- টাকা দিয়ে ঝাড়গ্রাম নার্সিংহোমে অপারেশন করিয়ে নিতে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গত ১৮ সেপ্টেম্বর ধনপতি বাবুকে ঝাড়গ্রাম নার্সিংহোমে ভর্তি করেন পারিবারের লোকেরা। অগ্রিম কুড়ি হাজার টাকা জমা দিতে হয় বলেও অভিযোগ। এরপর, পায়ের অপারেশনের জন্য ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪ টে নাগাদ অপারেশন থিয়েটার-এ নিয়ে যাওয়া হয় ধনপতি মাহাত-কে। এরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পারিবারের সদস্যদের জানায়, রোগীর মৃত্যু হয়েছে! এরপর, বেসরকারি হাসপাতালের তরফে দেওয়া মৃত্যুর নথিতে বা অফিসিয়াল কাগজে মৃত্যুর সময় সন্ধ্যা ৭ টা ৫৪ মিনিট উল্লেখ করা হয় বলে অভিযোগ। ওই দিনই রাত্রি ৯ টা নাগাদ ধনপতি মাহাত’র মৃতদেহ নার্সিংহোমের অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পরই মৃত ধনপতি মাহাত-র পরিবার ঝাড়গ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ঝাড়গ্রাম নার্সিংহোম এবং ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক মৃণালকান্তি সাহা ও ডাক্তার মানিক সিংয়ের বিরূদ্ধে। একই সঙ্গে মৃতদেহের ময়না তদন্তেরও দাবি করে পরিবার। সেইমত, মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করে, মৃতদেহ পারিবারের হাতে তুলে দেয় ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ। পারিবারের দাবি, “সঠিক তদন্ত করে, চিকিৎসার নামে মানুষ মারার খেলায় যুক্ত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক পুলিশ প্রশাসন।”