দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন: রাজ্য জুড়ে সক্রিয় দালালচক্র। তা সে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হোক, কিংবা ভুয়ো শংসাপত্র (Certificate) জোগাড় করে দেওয়া! এসএসসি, প্রাইমারি নিয়োগ নিয়ে যখন উত্তাল রাজ্য ঠিক সেই সময়ই একটি ভুয়ো ‘মেডিক্যাল সার্টিফিকেট’ ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হল পশ্চিম মেদিনীপুরে। তাঁর সই জাল (Fake Sign) করে ভুয়ো সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে দাবি করে, জেলা পুলিশ সুপার, জেলাশাসক এবং রাজ্যের NVF আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র দায়ের করলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (CMOH) ডাঃ ভুবন চন্দ্র হাঁসদা স্বয়ং। উল্লেখ্য যে, ভুয়ো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা করে, নিজেকে ‘আনফিট’ দেখিয়ে NVF-এর চাকরিতে পোষ্যকে (ছেলে-মেয়ে-আত্মীয়কে) চাকরি পাইয়ে দিতেই এই ধরনের প্রতারণার আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল বলে প্রাথমিক অনুমান।
ঘটনা প্রসঙ্গে, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবন চন্দ্র হাঁসদা বলেন, “এমন একটি সার্টিফিকেট আমাদের দপ্তরে আসেও কোনও বিশেষ কারণে। যেটি দেখার পর আমার দপ্তরের কর্মীদের সন্দেহ হয়। সার্টিফিকেটটি আমাকে দেখান। আমি দেখি সার্টিফিকেটটি ভুয়ো। এমন কোনও সার্টিফিকেট আমরা ইস্যু করিনি। সার্টিফিকেটে একাধিক জায়গায় টেকনিক্যাল ভুল আছে আছে সঙ্গে কোনও ভাবেই মিলছে না। এমনকি আমার সইটি নকল! এই ঘটনা আমার নজরে আসার পর বিষয়টি লিখিত ভাবে যেখানে জানানো দরকার জানিয়েছি।” আরও দুটি এমন ঘটনা জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরে এসেছে বলে জানা গেছে। সে গুলিও ভুয়ো বলে চিহ্নিত হয়েছে। দপ্তর থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, গত ২৩ জুন ২০২২ তারিখে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তর থেকে এনভিএফ দিলীপ নায়েক, রেজিঃ নং-১৬০৯০০৭৩ নামে একটি মেডিক্যাল আনফিট সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে! সার্টিফিকেটে দেখা যাচ্ছে এই দিলীপ নায়েকের বাড়ি, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা এলাকায়। হাত ফেরি হয়ে এই সার্টিফিকেট আসে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারীকের হাতে। তিনি দেখেই ধরে ফেলেন। এই মেডিক্যাল আনফিট সার্টিফিকেটটি ভুয়ো! ঘটনা ধরা পড়ার পরেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের লিখিত ভাবে জানিয়ে দেন। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, কর্মরত এনভিএফ কর্মী নিজেকে মেডিক্যাল আনফিট দেখাতে পারলে, তাঁর পোষ্য-র জন্য ওই চাকরির আবেদন করতে পারবেন। আর তাই, সারা রাজ্য জুড়ে কখনও পৌরসভা থেকে কখনও স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ভুয়ো ডেথ সার্টিফিকেট বা আনফিট সার্টিফিকেট ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ ও প্রশাসনের একটি বিশেষ সূত্র জানাচ্ছে।